প্রোটিন পাউডারেই কি লুকিয়ে বিপদ? ছবি: সংগৃহীত।
যাঁরা ওজন বাড়াতে চান কিংবা যাঁরা নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করেন, তাঁদের অনেকের মনেই প্রোটিন পাউডার নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। পেশিবহুল সুঠাম চেহারা পেতে এই ধরনের পাউডার খাওয়া স্বাস্থ্যকর কি না, সেই প্রশ্ন জাগে অনেকেরই মনে। অনেকে আবার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে চড়া দামের এই বাক্সবন্দি প্রোটিন পাউডারগুলি পুষ্টিবিদ কিংবা ফিটনেসবিদের পরামর্শ ছাড়াই দিনের পর দিন খেয়ে চলেছেন। এই অভ্যাস কিন্তু নানা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা দেহের ওজনের সমানুপাতিক। প্রতি কিলো ওজন পিছু দৈনিক ০.৮ থেকে ১ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, কারও ওজন যদি ৫০ কেজি হয় তবে তাঁর প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। তবে যাঁরা খেলোয়াড় এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই চাহিদা কিছুটা বেশি। তাঁদের দেহের প্রতি কিলো ওজনের জন্য, দৈনিক দেড় থেকে দুই গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। তবে মনে রাখতে হবে, এক জন সাধারণ মানুষ যখন জিমে ঘাম ঝরান, তখন তাঁর এই অতিরিক্ত প্রোটিনের প্রয়োজন নেই। সঠিক খাদ্যাভ্যাসই দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে যথেষ্ট।
অতিরিক্ত প্রোটিন পাউডার নানা ধরনের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
১) এই ধরনের পাউডার দীর্ঘ দিন ধরে খেলে তা কিডনি ও লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
২) এই অভ্যাস মাথা ঘোরা, ক্ষুধামান্দ্য, ডায়ারিয়া কিংবা মানসিক চাপের মতো সমস্যাও ডেকে আনে।
৩) অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দ্রুত পেশি গঠন করার জন্য যে ধরনের প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করা হয়, তাতে স্টেরয়েড জাতীয় উপাদান মিশ্রিত থাকে। এই স্টেরয়েড দীর্ঘ দিন শরীরে প্রবেশ করলে স্থূলতার সমস্যা শুরু হয়।
অতিরিক্ত প্রোটিন পাউডার শরীরে ক্যালশিয়ামের ভারসাম্য বিগড়ে দেয়। ছবি: সংগৃহীত।
৪) অতিরিক্ত প্রোটিন পাউডার শরীরে ক্যালশিয়ামের ভারসাম্য বিগড়ে দেয়। এই কারণে বাতের ঝুঁকি বাড়ে।
৫) প্রোটিন হজম করতে শরীরের চাই অতিরিক্ত জল। প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
পাশাপাশি, মনে রাখতে হবে যে, কোনও ধরনের প্রক্রিয়াজাত প্রোটিনের তুলনায় প্রাকৃতিক খাবার থেকে প্রোটিন শোষণ করা দেহের পক্ষে অনেক বেশি সহজ। কাজেই প্রোটিন পাউডার খেতে চাইলে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।