আসনে জব্দ ঋতুস্রাবের কষ্ট! ছবি: সংগৃহীত।
শীতকালে যে কোনও ধরনের ব্যথার দৌরাত্ম্য বাড়ে। আর সেই ব্যথা যদি ঋতুস্রাবজনিত হয়, তা হলে তো কথাই নেই। এমনি সময়ে ঋতুস্রাবের কষ্ট নিয়ন্ত্রণে দিনে দুটো ব্যথা কমানোর ওষুধ খেতে হত, এখন সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে তিন থেকে চারে। চিকিৎসকেরা বলেন, জরায়ুর সঙ্কোচন-প্রসারণে এই ধরনের ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে, আবহাওয়ার তাপমাত্রা কমতে থাকলে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। তাই ব্যথার মাত্রা তীব্র হতে থাকে। অনেকেই রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গরম জলের সেঁক নেন। তাতে আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু সাময়িক। তবে নিয়মিত কয়েকটি আসন করলে কিন্তু এই ধরনের ব্যথা দমন করা যায়।
শীতে ঋতুস্রাবের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে কী কী আসন করবেন?
১) উষ্ট্রাসন
হাঁটু গেড়ে বসুন। পিছনের দিকে খানিকটা হেলে হাত দু’টি দিয়ে পায়ের গোড়ালি ধরুন। এর পর মাথা পিছনের দিকে ঝুলিয়ে দিয়ে ধীরে ধীরে পেটের অংশটা সামনের দিকে এগিয়ে দিন। ডান হাতের বুড়ো আঙুলটি ডান দিকের গোড়ালির ভিতর দিকে রেখে বাকি সব আঙুল বাইরের দিকে রাখুন। বাঁ দিকের ক্ষেত্রেও একই ভাবে রাখুন। পায়ের পাতা মাটিতে রাখুন। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে শবাসন করে শুরুর অবস্থায় ফিরে যান। বার পাঁচেক অভ্যাস করুন।
২) ভুজঙ্গাসন
ম্যাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার হাতের তালু্ মেঝের উপর পাঁজরের দুই পাশে রাখুন। এর পর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিতে তুলুন। এর পর মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান। প্রথম দিকে এই আসন তিন বার করুন। পরবর্তী কালে ৫-৬ বারও করতে পারেন।
৩) সেতুবন্ধনাসন
হাঁটু ভাঁজ করে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। পায়ের পাতা এবং দেহের উপরের অংশে ভর দিয়ে কোমর মাটি থেকে তুলে ধরুন। দুই হাত জোড় করে পিঠের তলায় রাখুন। ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড এই অবস্থায় থাকুন। পরে ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকতে পারেন।
শশঙ্গাসন। ছবি: সংগৃহীত।
৪) শশঙ্গাসন
প্রথমে হাঁটু গেড়ে বসুন। তার পর মাথা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে চেষ্টা করুন কপাল দিয়ে হাঁটু ছুঁতে। এ বার হাত দিয়ে দু’পায়ের গোড়ালি ধরুন। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিন। তার পর ধীরে ধীরে মাথার তালু মাটিতে ছুঁইয়ে দশ বার গুনে ছেড়ে দিন।
৫) নাড়ি শোধন প্রাণায়াম
সব শেষে, এক নাক দিয়ে অক্সিজেন গ্রহণ করা এবং অন্য নাক দিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছাড়া। এই পুরো প্রক্রিয়াটি করতে হবে সুখাসনে বসে। অভ্যাস না থাকলে মাথা ঘুরতে পারে। তাই শুরুতেই খুব বেশি ক্ষণ প্রাণায়াম করার প্রয়োজন নেই।