সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে জ্বর, মাথাব্যথা-সহ শরীর জুড়ে ব্যথার প্রবণতা থাকে, ডেঙ্গিও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। ছবি: সংগৃহীত
রাজ্য জুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গির দাপট। এই সময়টায় ভাল থাকার একটাই উপায় মশার হাত থেকে বাঁচা। শহরাঞ্চলের মানুষদের মশারির সঙ্গে আড়ি অনেক দিনের। তাই মশাবাহিত ডেঙ্গি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ইদানীং ডেঙ্গির প্রবণতা খুব বেড়েছে। তাই জ্বর হলে ফেলে না রাখাই ভাল। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে জ্বর, মাথাব্যথা-সহ শরীর জুড়ে ব্যথার প্রবণতা থাকে। ডেঙ্গিও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। একটা কথা মনে রাখতে হবে। সাধারণ জ্বর হলে গা-হাত-পা ব্যথা কমাতে অনেকেই আইব্রুফেন বা অ্যাসপিরিন জাতীয় ব্যথার ওষুধ খান। কিন্তু ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের সময় এই ধরনের ওষুধ ভুলেও খাবেন না। ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার হলে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠতে পারে।
১) জ্বর, মাথাযন্ত্রণা, হাত-পায়ের সঙ্গে সারা শরীরে ব্যথা। চোখের পিছনে ব্যথা শুরু হয়।
২) বমি ভাব, অরুচি। গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা। প্রস্রাব কম হওয়া।
৩) সঙ্গে গায়ে র্যাশ, চুলকানি, ডায়ারিয়া, দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়।
৪) গলাব্যথা, ঢোঁক গিলতে কষ্ট।
এই সব উপসর্গ থাকলেই র্যাপিড টেস্টের মাধ্যমে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে দ্রুত। জ্বর দেখে যে হেতু ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, করোনা কিছুই বোঝা যায় না, তাই ব্লাড কাউন্ট-সহ প্রথমেই প্রাথমিক রক্ত পরীক্ষা অর্থাৎ ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া টেস্ট করতে হবে। খুব মারাত্মক উপসর্গ না থাকলে ডেঙ্গি রোগীর চিকিৎসা বাড়িতে রেখেই করা যেতে পারে। প্রয়োজন কেবল বাড়তি সতর্কতার।
প্রতি ৩ ঘণ্টার অন্তর জ্বর মাপতে হবে। ছবি: শাটারস্টক
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে কী করবেন আর কী করবেন না?
১) ডেঙ্গি হলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শে জ্বরের ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বারে বারে জল ও জলীয় খাবার খেতে হবে। শরবত, ফলের রস, পাতলা ঝোল, ডাল, স্যুপ, লিকার চা ইত্যাদি খাবার বারে বারে খেতে হবে।
২) প্রতি ৩ ঘণ্টা অন্তর জ্বর মাপতে হবে। এই সময় রক্তচাপ কমে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই নিয়মিত সেটাও মাপতে হবে। জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল ওষুধ খাবেন না।
৩) এই সময় রক্তে প্লাজমা ও অণুচক্রিকার মাত্রা কমে যায়। তাই ডায়েটে বেশি করে মরসুমি ফল, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল ও শাক-সব্জি রাখতে হবে।
৪) কোভিডের মতো ডেঙ্গি রোগীকেও নিভৃতবাসে থাকতে হবে। এই সময় মশারি ব্যবহার করাই শ্রেয়। উপসর্গগুলি খুব ভাল করে লক্ষ রাখতে হবে।
৫) ডেঙ্গি শক সিনড্রোম থেকে মানবদেহে জলশূন্যতা তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে পাল্স রেট অনেকটা বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ খুব কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাস খুব দ্রুত চলে। রোগী অস্থির হয়ে ওঠেন। তখন সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।