ডায়েট করলে কি আম খাওয়া যায়? ছবি: শাটারস্টক
প্যাচপেচে গরমও যে কারণে হাসিমুখে মেনে নেয় বাঙালি, তা হল আম। একটু গরম পড়তেই বাজারে বাজারে বাহারি আম নিয়ে দরদামে লেগে পড়েন খাদ্যরসিকরা। গ্রীষ্মে দাবদাহ-আর্দ্রতার অস্বস্তি সত্ত্বেও যে কারণগুলি এই ঋতুকে কিছুটা হলেও সহনীয় করে তুলেছে, তার অন্যতম এই সময়ের ফলের বাজার।
কাঁচা হোক বা পাকা, সব রকমের আমই রসনাতৃপ্তিতে ব্যবহার করে বাঙালি। কাঁচা আম দিয়ে আমতেল, আমমাখা আমডাল, আমের আচার কত কী হয়! আর পাকা আম পেলে তো কথাই নেই।
তবে শুধুই কি স্বাদ! গুণের দিক থেকেও কিন্তু অন্যান্য ফলকে রীতিমতো টেক্কা দিতে পারে আম। পেট থেকে ত্বক-চুল বিভিন্ন সমস্যা মেটানোর জন্য আমের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। পুষ্টিবিদদের মতে, আমের শাঁস থেকে আঁটি— পুরোটা থেকেই কিছু না কিছু উপকার মেলে। পরিমিত পরিমাণে আম খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়। জানেন কি, আপনার শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে আম কতটা সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারে?
১) আমে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন সি, সেই সঙ্গে ফাইবার। রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই পরিমাণ বুঝে নিয়মিত আম খান।
২) আমে রয়েছে দরকারি উৎসেচক, যা শরীরের প্রোটিন অণুগুলো ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৩) ত্বকের যত্নেও ভূমিকা রয়েছে আমের। আমের আঁশে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফেরায়। আম বাটা মাখলেও ত্বকে রোমের মুখগুলি খুলে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার থাকে। আম চোখের জন্যও উপকারী।
৪) মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘এ’-এর চাহিদার প্রায় পঁচিশ শতাংশের জোগান দিতে পারে আম। ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে আম। এ ছাড়াও আমে রয়েছে প্রায় ২৫ রকমের বিভিন্ন কেরাটিনয়েডস, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
আমের মধ্যে আছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। ছবি: শাটারস্টক
৫) আমে পাওয়া যায় টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড, যা শরীরে অ্যালক্যালি বা ক্ষার ধরে রাখতে সাহায্য করে। আমের মধ্যে আছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। যাঁরা অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাঁরাও গরমে রোজ একটা করে আম খেতে পারেন। শরীরে শক্তি জোগান দিতে আমের জুড়ি মেলা ভার।
অনেকে মনে করেন আম খেলেই মোটা হয়। পুষ্টিবিদদের মতে, যাঁরা ওজন ঝরানোর জন্য ডায়েট করছেন, তাঁদের রোজের ডায়েটে আম রাখলে চলবে না। আমে ক্যালোরির মাত্রা বেশি থাকে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে রোজ আম খাওয়া যাবে না।