চোখের যত্ন নিতে রোজের অভ্যাসে আনতে হবে ৫ বদল। ছবি: সংগৃহীত।
চোখ শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অঙ্গ। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চোখ নিয়ে শুরু হয় নানা সমস্যা। জীবনযাপনে নানা অনিয়মের কারণে কম বয়সেও চোখের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকেই।। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে বিশ্রাম পায় না চোখও। অথচ যত চাপ চোখের উপরেই। অফিসে কম্পিউটার, ল্যাপটপের সামনে দীর্ঘ ক্ষণ কাজ কিংবা বাড়ি ফিরে মোবাইলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিল দেখার ঠেলায় চোখের বিশ্রাম তেমন করে হয় না বললেই চলে। কম বয়সের এই অভ্যাস থেকেই বার্ধক্যে চোখে দেখা দেয় নানা রকম সমস্যা। ৪০-এর পর চোখের চাই বাড়তি যত্ন। চোখের যত্ন নেওয়া যে খুব কঠিন ব্যাপার, তা কিন্তু নয়। চোখ ভাল রাখতে কী ভাবে সতর্ক হবেন, রইল হদিস।
১) চোখ ভাল রাখতে বেশি করে জল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। শরীরে জলের মাত্রা যত বেশি থাকবে, চোখ তত ভাল থাকবে। অনেক ক্ষণ একদৃষ্টে কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। মাঝেমাঝে চোখে জলের ঝাপটা দিন।
২) সারা ক্ষণ টিভি বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ থাকে অধিকাংশের। কিন্তু সেই অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে চোখের কথা ভেবে। না হলে চোখ শুকিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যদি টানা কম্পিউটারে কাজ করতে হয়, তবে পর্দার সঙ্গে চোখের যেন থাকে যথেষ্ট দূরত্ব। যাঁরা কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করেন, তাঁদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। পাশাপাশি, এখন বিশেষ ধরনের চশমা পাওয়া যায় যা বৈদ্যুতিন পর্দা থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। প্রয়োজনে পরতে হবে নীল ও অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক চশমা।
৩) যাঁরা কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করেন, তাঁদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। অতিরিক্ত রোদে বেরোনো চোখের জন্য ভাল নয়। সূর্যের আলো সরাসরি যাতে চোখে বেশি ক্ষণ না পড়ে, তার জন্য কালো রোদচশমা পরে নেওয়া যেতে পারে। খুব চড়া রোদে খালি চোখে বেরোবেন না।
৪) শরীর সুস্থ রাখতে যেমন নিয়মিত শরীরচর্চার প্রয়োজন, তেমনই চোখ ভাল রাখতেও করতে হবে চোখের ব্যায়াম। এই ক্ষেত্রে মেনে চলতে পারেন ২০-২০-২০ নিয়ম। এই নিয়ম অনুসারে ২০ মিনিট একটানা পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার পর অন্তত ২০ সেকেন্ড ২০ ফিট দূরত্বের কোনও বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। পাশাপাশি, বার বার চোখের পলক ফেলাও জরুরি।
৫) চোখের কোনও রকম ক্ষতি রুখতে বছরে অন্তত এক বার চোখের পরীক্ষা করানো জরুরি। নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করালেই গ্লকোমা, ছানির মতো সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে।
এর পাশাপাশি ডায়েটেও নজর দেওয়া জরুরি। ভিটামিন এ, সি, ই, জিঙ্ক, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় পুষ্টি দৃষ্টিশক্তির জন্য খুবই জরুরি। তাই রোজকার খাবার থেকে এই পুষ্টিগুণগুলি যাতে পান, তা নিশ্চিত করুন। সামুদ্রিক মাছ, শাক সব্জি, ফল জাতীয় খাবার রোজ খান। আট থেকে আশি— সব বয়সের মানুষের জন্যেই এগুলি জরুরি। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বেশি করে খান। ক্যারোটিনয়েড চোখের রেটিনার জন্য বিশেষ করে উপকারি। ডিম বা সবুজ সব্জিতে ক্যারোটিনয়েড থাকে। তাই এই খাবারগুলি রোজকার ডায়েটে অবশ্যই রাখবেন।