ফুসফুসের ক্যানসারের কিছু অজানা উপসর্গ না জানলেই বিপদ। ছবি: শাটারস্টক।
আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম, অতিরিক্ত দূষণের জেরে আমাদের চারপাশে যে সব অসুখের প্রকোপ সবচেয়ে বেড়েছে, তার মধ্যে ক্যানসার অন্যতম। দেশে যে সব ক্যানসারের প্রবণতা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে, তার মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার অন্যতম। মূলত ধূমপায়ীদেরই ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারও ফুসফুসে ক্যানসার হলেই আমরা ধরে নিই, তিনি ধূমপায়ী ছিলেন। তবে ধূমপান না করলেও ফুসফুসে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে।
এই রোগের মূলে যে হেতু নিকোটিন-সহ তামাকে থাকা অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান, তাই নিজে ধূমপান না করলেও চারপাশের ধূমপানের ধোঁয়া থেকেও দূরে থাকা জরুরি। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধোঁয়া আরও বেশি ক্ষতিকর। তাই তাদেরও পরোক্ষ ধূমপান থেকে দূরে রাখতে হবে। এক টানে যতটা নিকোটিন পৌঁছয়, তা ফুসফুসের উপর নিকোটিনের আস্তরণ তৈরি করে। শরীর সেই সব টক্সিন দূর করতে পারে না। তাই পরোক্ষ ধূমপান চলবে না কোনও ভাবেই।
চিকিৎসকদের মতে, ফুসফুসের ক্যানসারের প্রধান সমস্যা, এটি ধরা পড়ে খুব দেরিতে। এই রোগের কিছু প্রাথমিক উপসর্গ থাকে। লক্ষণগুলি সাধারণ ভেবে অনেকেই অবহেলা করেন। জেনে নিন, ফুসফুসে ক্যানসারের ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে হলে কোন উপসর্গগুলি অবহেলা করলেই বিপদ।
১) কাশি শুরু হয়েছে, কিছুতেই কমছে না, লাগাতার বেড়েই চলছে। দীর্ঘ দিনের কাশি উপেক্ষা করা মোটেই ঠিক নয়।
২) কফের সঙ্গে রক্তপাত হচ্ছে।
৩) বুকে ব্যথা, নাগাড়ে ব্যথা থেকে যাওয়া। বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ।
৪) মাঝেমাঝেই ফুসফুসে সংক্রমণ হয়ে নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হওয়া। হালকা শ্বাসকষ্ট।
৫) মাথার যন্ত্রণা।
৬) কোনও কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া। খিদে কমে যাওয়া। খাবার গিলে খেতে অসুবিধা হওয়া।
৭) গলা ধরে যাওয়া বা গলার স্বর বদলে যাওয়া।
৮) পাঁজরের হাড়ে যন্ত্রণা।
চিকিৎসকদের মতে, ফুসফুসের ক্যানসারের প্রধান সমস্যা, এটি ধরা পড়ে খুব দেরিতে। ছবি: শাটারস্টক।
সাধারণত এই ধরনের উপসর্গ হলে (কাশির সঙ্গে রক্ত বেরোনো ছাড়া) বেশির ভাগ মানুষই পাত্তা দেন না। ধূমপায়ী ব্যক্তির ক্ষেত্রে যখনই দু’-একটি উপসর্গ দেখা যাবে, তখনই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে একটি চেস্ট এক্সরে করিয়ে নেওয়া উচিত। প্রয়োজন অনুযায়ী সিটি স্ক্যান, এফএনএসি বা বায়োপ্সি করাতে হতে পারে। ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পরলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশি, তবে তার জন্য চাই বাড়তি সতর্কতা।