প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
অনেক মেয়েরই ঋতুস্রাবের সময়ে খুব বেশি রক্ত ক্ষয় হয়। এবং ঋতুস্রাবের সময়ে অতিরিক্ত পেটে ব্যথাও হয়ে থাকে। নানা রকম শারীরিক জটিলতা থাকলে এমনটা হতে পারে। কিন্তু এর অন্যতম কারণ হতে পারে জরায়ুর জটিল রোগ অ্যাডিনোমায়োসিস। কী এই রোগ, কী তার উপসর্গ, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন স্ত্রীরোগ চিকিৎসক ভিমি বিন্দ্র।
অ্যাডিনোমায়োসিস রোগটি আদপে কী?
জরায়ুর চার পাশে যে পেশির স্তর রয়েছে তাতে যদি এন্ডোমেট্রিয়াল গ্রন্থী বা স্ট্রোমা তৈরি হয়, তা হলে তাকে বলে অ্যাডিনোমায়োসিস। এতে জরায়ুর আকার অনেকটা পৃথিবীর মতো হয়ে যায় এবং অনেকটাই ব়ড় হয়ে যায়। এটি জরায়ুর এক অংশে হতে পারে, আবার গোটা জরায়ু জুড়েও হতে পারে। কিন্তু মনে রাখাতে হবে, এন্ডোমেট্রিয়োসিস রোগটির সঙ্গে এর কোনও যোগ থাকতেও পারে, না-ও পারে।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
এই রোগের স্পষ্ট কারণ এখনও সে ভাবে জানা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বেশি বয়সে মা হওয়ার পর এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
এর উপসর্গ কী কী?
রোগ কতটা গুরুতর তার উপর উপসর্গ নির্ভর করে। বেদনাদায়ক ঋতুস্রাব, অতিরিক্ত রক্তক্ষয়, পেট ফুলে থাকা, পেলভিক অংশে ব্যথা (যা রোগ আরও জটিল হলে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে) এবং বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা এই রোগের উপসর্গ হতে পারে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে?
যদি দেখেন ঋতুস্রাবের সময়ে অতিরিক্ত ব্যথা এবং রক্তক্ষয় হচ্ছে (এতটাই যে রোজের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে) এবং মা হতেও সমস্যা হচ্ছে, তা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
রোগ কতটা গুরুতর তার উপর উপসর্গ নির্ভর করে।
এই রোগ কতটা গুরুতর হতে পারে?
খুব বেশি রক্তক্ষয় এবং ব্যথা দীর্ঘ অ্যানিমিয়া এবং ক্লান্তি ডেকে আনতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া অতিরিক্ত পেলভিক ব্যথা হলে প্রাত্যহিক জীবনযাপনে সমস্যা হতে পারে।
রোগের চিকিৎসা কোন পথে?
ব্যথা বা অত্যধিক রক্তক্ষয়ের জন্য চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ নিতে হবে। পেলভিক অংশে ব্যথার জন্য ঈষদুষ্ণ জলে স্নান এবং হট ব্যাগের সাহায্য নিতে পারেন। ব্যথা খুব বাড়লে ওষুধও নেওয়া যায়। রোগ অতিরিক্ত জটিল হলে ল্যাপ্রোস্কোপিক সার্জারি করা যেতে পারে। মা হওয়ায় সমস্যা হলেও অস্ত্রপচারের পথে হাঁটেন অনেক চিকিৎসক।