গরমে ডায়েরিয়া থেকে দূরে থাকতে কতগুলি নিয়ম মানতেই হবে। প্রতীকী ছবি।
গ্রীষ্মের পারদ চড়ছে ক্রমশ। শেষ কবে এমন গরম পড়েছিল, তা অনেকেরই স্মৃতিতে নেই। গরমে দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে শহর থেকে শহরতলি। বাইরে বেরোনো তো দূর, গরমে ঘরে থাকাই দায় হয়ে উঠছে। গ্রীষ্মের আবহাওয়া মানেই বিশেষ কিছু অসুখের বাড়বাড়ন্ত। গরমে ঘেমেনেয়ে ঠান্ডা পানীয়ে চুমুক বা খাওয়াদাওয়ার সামান্য অনিয়ম— এ সবের হাত ধরেই হানা দেয় নানা অসুখ। এই সব রোগের মধ্যে অন্যতম হল ডায়েরিয়া। এই রোগ এক বার যদি বাসা বাঁধে শরীরে, সহজে সুস্থ হওয়া খুব মুশকিল। এমনকি বাড়াবাড়ি হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
গরমে ডায়েরিয়ার মতো অসুখে বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও কম থাকে। তবে বড়দের ক্ষেত্রেও সময় মতো চিকিৎসা শুরু না করলে এই অসুখ মারাত্মক আকার নিতে পারে। এই সময়ে তেল-মশলাদার খাবার বেশি খেলেই পেটের গোলমাল শুরু হয়। তার উপর হজমশক্তিও কমে যায়। গরমের সময়ে তেষ্টা মেটাতে অনেক সময়ে বাইরের জল খাওয়া হয়। তা থেকেও শরীরে এই রোগ ঢুকতে পারে।
ডায়েরিয়া মূলত জলবাহিত ব্যাকটেরিয়া থেকে ছড়ায়। শরীরের জল বেরিয়ে যায় বলে এই অসুখ খুবই দুর্বল করে ফেলে। দরকারে স্যালাইনও দিতে হয়। তবে এই অসুখ থেকে দূরে থাকতে কতগুলি নিয়ম মানতেই হবে।
১) চিকিৎসকদের মতে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে এই অসুখ এড়ানো সম্ভব। রান্নাঘর ও খাওয়ার জায়গা পরিষ্কার রাখুন। বাসন মাজার জন্য পরিষ্কার জল ব্যবহার করুন। মুখ ধোয়ার সময়ে ব্যবহার করুন পরিষ্কার ও পরিস্রুত জল।
২) সারা বছরই পরিস্রুত জল খেতে হবে। রাস্তাঘাটের যে কোনও জায়গা থেকে জল খাবেন না। প্রয়োজনে বোতলবন্দি বা ফোটানো জল খান। তবে জল বেশি করে খেতে হবে।
৩) গরমের সময়ে খাবার বেশি ক্ষণ ফেলে রাখবেন না। গরম অবস্থাতেই খান। ঠান্ডা হয়ে গেলে আবার গরম করে তবেই খান। কারণ, খাবার ঠান্ডা হলে তাতেও কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে, যা ডায়েরিয়ার মতো সমস্যা ডেকে আনে।
৪) ডায়েরিয়ার প্রকোপ থেকে বাঁচতে এই সময়ে রাস্তার খাবার যতটা পারেন এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে বেশি তেল-মশলা যুক্ত খাবার একেবারেই খাবেন না। মোট কথা, যে সব খাবারে টকজল রয়েছে বা যাতে স্যুপের আকারে জল সরাসরি পেটে যায়, সে সব এড়িয়ে চলুন। অপরিষ্কার হোটেল বা রেস্তরাঁয় না খাওয়াই শ্রেয়।
৫) গরমে ফল খাওয়া ভাল। তা বলে কাঠফাটা গরমে বেরিয়েই রাস্তার কাটা ফল খাবেন না। গোটা ফল কিনে ভাল করে ধুয়ে, তবে খান। শরবত, ঘোল, লেবুর জলের মতো পানীয় রাস্তার ধারের অপরিচ্ছন্ন দোকান থেকে না খাওয়াই শ্রেয়।