গ্লকোমা কেন হয়? ছবি: সংগৃহীত।
ড্রাই আইজ়, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালা করা কিংবা অনবরত চোখ থেকে জল পড়া— এই সব উপসর্গ দেখলে না হয় সতর্ক থাকা যায়। কিন্তু কোনও রকম লক্ষণ ছাড়াই চোখে হানা দেয় গ্লকোমা। চিকিৎসকেরা বলছেন, সঠিক সময়ে এই রোগ ধরা না পড়লে দৃষ্টিশক্তি একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অনেকেই মনে করেন, অত্যধিক মোবাইল, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারে চোখ রাখলে এই ধরনের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তবে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলতে গেলে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
গ্লকোমা আসলে কী?
চোখের যে অংশ দিয়ে ফ্লুইড বা তরল প্রবাহিত হয়, সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে তা কোনও একটি স্থানে জমতে শুরু করে। এর ফলে চোখের অপটিক নার্ভে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। যাকে ‘ইন্ট্রাঅকুলার প্রেশার’ বলা হয়। চাপ বাড়তে থাকলে দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ক্ষীণ হতে থাকে। যা পরবর্তী কালে অন্ধত্ব ডেকে আনে। গ্লকোমায় আক্রান্ত হলে একেবারে শুরুর দিকে রোগীর ‘সাইড ভিশন’ অর্থাৎ পাশের জিনিস দেখার ক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। চোখের চারপাশে অতিরিক্ত ফ্লুইড জমলে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। ক্ষতির শুরু কিন্তু সেখান থেকেই। সুতরাং কারও যদি ‘সাইড ভিশন’ ঝাপসা হতে শুরু করে, সে ক্ষেত্রে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, দেরি হলে জটিলতা বাড়তে পারে।
‘সাইড ভিশন’ ঝাপসা হতে শুরু করেছে? ছবি: সংগৃহীত।
গ্লকোমা কি সারতে পারে?
গ্লকোমা এমন একটি অসুখ, যার সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। ধরা পড়ার পরে চিকিৎসা শুরু হলেও ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা থেকেই যায়। শিশু থেকে বৃদ্ধ, এই রোগ যে কোনও মানুষেরই হতে পারে। তবে বাড়তি কোনও শারীরিক ঝুঁকি থাকলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যেমন পরিবারে কারও গ্লকোমা থাকলে, কারও ডায়াবিটিস বা উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকলে সতর্ক থাকতে হবে। যাঁরা স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খান, ইনহেলার নেন তাঁদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আবার চোখে গুরুতর চোট বা আঘাত লাগলে গ্লকোমা হানা দিতে পারে।