সিগারেটের নেশা ছাড়তে ইদানীং অনেকেই ‘ই-সিগারেট’-এর উপর ভরসা রাখেন। ছবি: সংগৃহীত।
মধ্যরাতে হঠাৎ বুকে অসহ্য যন্ত্রণা, দমবন্ধ হয়ে আসার মতো লক্ষণ দেখে ভেবেছিলেন, হার্ট অ্যাটাক। কিন্তু চিকিৎসক জানান, তা আসলে ফুসফুসের সমস্যা। এবং তার কারণ হল ই-সিগারেট এবং ভেপিং। বছর ৩০-এর জর্ডন স্নোডন বহু দিন ধরেই ধূমপানে আসক্ত। কিন্তু এই ধরনের সমস্যা তাঁর কখনও হয়নি। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, নিয়মিত ধূমপানের ফলে জর্ডনের ফুসফুসে গুহার মতো একটি জিনিস তৈরি হয়েছে। যার জেরেই এই সমস্যা।
সাধারণ সিগারেট থেকে নির্গত নিকোটিনের ধোঁয়া সব সময়ে ভাল লাগে না। পুদিনা, ভ্যানিলা, স্ট্রবেরি-সহ বিভিন্ন কৃত্রিম গন্ধ এবং স্বাদের ই-সিগারেটে টান দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। জর্ডনও তাঁর চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে শ্বাসনালিতে ই-সিগারেটের ‘ঠান্ডা’, ‘চিনচিনে’ অনুভূতি তাঁর ভাল লাগে। তবে, তা থেকে যে এমন শারীরিক সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়ে তিনি একেবারেই সতর্ক ছিলেন না। এক সাক্ষাৎকারে জর্ডন বলেন, “বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মাঝে মধ্যে ভেপিং করতাম। ক্রমে তা নেশায় পরিণত হয়। হঠাৎ এক দিন মধ্যরাতে বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়। এমন অবস্থা হয় যে, ঠিক ভাবে শ্বাস নিতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম, হার্ট অ্যাটাক হল বুঝি।” তবে, চিকিৎসকদের তৎপরতায় তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার হওয়ায় এ যাত্রায় তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পুরোপুরি সুস্থ হতে জর্ডনের মাসখানেক সময় লাগবে।
ই-সিগারেট খেলে কিংবা ভেপিং করলে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
১) নিয়মিত ভেপিং করলে অ্যাজ়মার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২) কৃত্রিম স্বাদ এবং গন্ধের জন্য ভেপিং যন্ত্রে বিশেষ একটি রাসায়নিক মেশানো হয়। যা ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর।
৩) নিকোটিনের প্রভাবে ফুসফুস ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে হার্ট এবং মস্তিষ্ক।
৪) ভেপিং, ‘ই-সিগারেট’-এর প্রভাবে ফুসফুসে ‘ইভালি’-র মতো জটিল সমস্যা হতে পারে। যা পুরোপুরি নির্মূল করা যায় না।
৫) নিকোটিন নেশার বস্তু। নিয়মিত শরীরে প্রবেশ করলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা, গতিপ্রকৃতিও বদলে যায়। যার ফলে আচরণগত পরিবর্তনও আসে।