নরম পানীয়ে কী কী বিপদ লুকিয়ে? প্রতীকী ছবি।
ভারী খাবার খেয়ে ঢকঢক করে বোতলবন্দি নরম পানীয় গলায় ঢেলে ভাবছেন, হয়তো দ্রুত হজম হবে। আসলে তলে তলে যে হাড়ের ক্ষয় হচ্ছে, তা কি জানেন? আমেরিকার ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’ ও ‘দি আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এর তথ্য বলছে, বেশি নরম পানীয় খেলে শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হবে। ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকবে হাড়ের। ফলে বাতের ব্যথা তো বটেই, আরও নানা রোগ বাসা বাঁধবে শরীরে।
নরম পানীয়ে চিনির মাত্রা এতটাই বেশি থাকে যে, তা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ওজন বাড়তে পারে, হার্টের রোগ হতে পারে, ডায়াবিটিসের আশঙ্কাও থাকে। কিন্তু নরম পানীয় থেকে যে হাড়ের ক্ষয়রোগও হতে পারে, সে ধারণা অনেকেরই নেই।
‘দি আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’ পত্রিকায় যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে গবেষকেরা লিখেছেন, নরম পানীয়ে খুব বেশি মাত্রায় থাকে ক্যাফিন ও ফসফরিক অ্যাসিড। এই দুই উপাদানই শরীর থেকে ক্যালশিয়াম শুষে নিতে শুরু করে। রোজের খাবার, ওষুধপত্র বা সাপ্লিমেন্ট থেকে যে পরিমাণ ক্যালশিয়াম শরীরে ঢোকে, তার সবটাই শুষে নিতে পারে নরম পানীয়ে থাকা ওই দুই উপাদান। যাঁরা রোজ নরম পানীয় খান, তাঁদের শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলেই মত গবেষকদের।
সুস্থ থাকার জন্য প্রতি দিনের ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট থাকা যেমন জরুরি, তেমনই পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন ও খনিজও প্রয়োজন। আর এই খনিজ উপাদানগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যালশিয়াম। হাড়, দাঁতের গঠন মজবুত করে ক্যালশিয়াম। এর ঘাটতি হলে পেশিতে ব্যথা, ক্র্যাম্প এবং খিঁচুনি হতে পারে। গাঁটে গাঁটে ব্যথা হতে পারে, চরম ক্লান্তিভাব দেখা দিতে পারে। সব সময় আলস্য বোধ হতে পারে। এর প্রভাবে অনিদ্রার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হলে ত্বক শুষ্ক, নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়, এগ্জ়িমা বা ত্বকের প্রদাহ, চুলকানির সমস্যাও দেখা দেয়। শরীরে ক্যালশিয়ামের সামগ্রিক মাত্রা কমে গেলে, শরীর হাড় থেকে ক্যালশিয়াম শুষে নেয়। এ কারণে হাড় ভঙ্গুর হয়ে ওঠে।
ডায়েট সোডাও সুরক্ষিত নয় বলেই মত গবেষকেদের। কারণ, ডায়েট সোডাতেও উচ্চ মাত্রায় ক্যাফিন ও ফসফরিক অ্যাসিড থাকে। তাই ডায়েট কোক বা ডায়েট সোডাও কিন্তু শরীরের জন্য নিরাপদ নয়।