দেরি করে ঘুমানোর নেতিবাচক প্রভাব ছবি: সংগৃহীত
দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া বর্তমানে এমন একটি বিষয় যা দেখা যায় প্রত্যেক ঘরে ঘরে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজের চাপ বা সময়ের অভাবে বহু মানুষ বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে বাধ্য হন। কেউ কেউ আবার জেগে থাকেন স্বেচ্ছায়। কিন্তু জানেন কি দেরি করে ঘুমাতে গেলে ঘুমের অভাব হয়, যা ডেকে আনতে পারে বহুবিধ বিপদ?
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১) মৃত্যু
ব্রিটেনের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের ঘুম অনিয়মিত ও যাঁদের পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব রয়েছে, তাঁদের মৃত্যুর হার যাঁরা নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমান তাঁদের তুলনায় বেশি। ঘুমের অভাবে ভুগছেন এমন রোগীর সংবহনতন্ত্রের রোগ হওয়ার ঝুঁকি আশঙ্কাজনক ভাবে বেশি থাকে।
২) দীর্ঘস্থায়ী রোগ
মানুষের ঘুম কম হলে বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, যাঁরা অনিদ্রায় ভুগছেন, তাঁরা অন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যাতেও ভুগছেন যা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। ডায়াবিটিস, স্ট্রোক, অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দন, হৃদ্রোগ বা উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ ঘুমের অভাবের সঙ্গে বৃদ্ধি পায়।
৩) মানসিক অবসাদ
রাত জাগা মানসিক অবসাদ ও হতাশার লক্ষণগুলিকে বৃদ্ধি করে। ২০০৫ সালের একটি সমীক্ষা বলছে, যাঁরা উদ্বেগ বা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই গড়ে রাতে ছ’ঘণ্টার কম ঘুমান। অনিদ্রা আর মানসিক অবসাদ পরস্পর এতটাই নিবিড় সম্পর্কযুক্ত যে, একটি আক্রান্তকে অন্যটির দিকে টেনে নিয়ে যায়। অবসাদের লক্ষণগুলি রোগীর ঘুমিয়ে পড়ার ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
৪) স্মৃতির সমস্যা
‘শার্প ওয়েভ রিপালস’ নামে পরিচিত মস্তিষ্কের একটি ক্রিয়া স্মৃতিকে একত্রিত করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের নিওকর্টেক্স ও হিপ্পোক্যাম্পাসের সহায়তায় এই স্মৃতি স্থায়ী জ্ঞানে রূপান্তরিত হয়। গভীর ঘুমের মধ্যে এই প্রক্রিয়াটি সবচেয়ে ভাল হয়। সুতরাং দেরি করে ঘুমাতে গেলে এই প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয় না। ফলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা যায়।
৫) যৌন সমস্যা
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বা সঠিক সময়ে ঘুমাতে না যাওয়ার ফলে যৌন জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষত পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যাঁরা দেরি করে শুতে যান ও পর্যাপ্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত হন তাঁদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম থাকে, যা কমিয়ে দেয় যৌন মিলনের ইচ্ছা।