রাতের পর রাত জেগে চলছে টান টান উত্তেজনাপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ দেখা! ছবি: শাটারস্টক
ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে এখন শহরবাসীর মধ্যে উন্মাদনা তুঙ্গে! আট থেকে আশি, পিছিয়ে নেই কেউই। তরুণ প্রজন্ম বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে শহরের নানা ক্যাফেতে ভিড় জমাচ্ছে খেলা দেখার জন্য। হাতে কফির সঙ্গে টুকিটাকি নাস্তা আর চোখ রয়েছে টিভির পর্দায়। ষাটোর্ধ্বরাও পিছিয়ে নেই। রাতের পর রাত জেগে চলছে টান টান উত্তেজনাপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ দেখা! ফুটবলপ্রেমীদের নজর এখন শেষ দু’টি খেলার দিকে। ফ্রান্স-মরোক্কো সেমিফাইনাল আর ১৮ তারিখের ফাইনাল।
ষাটোর্ধ্বদের জন্য রাত জেগে খেলা দেখা কি আদৌ ভাল? যাঁদের হার্টের রোগ রয়েছে, তাঁরা উত্তেজনাপূর্ণ এই ফুটবল ম্যাচগুলি দেখলে কি শারীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে?
জার্মানি, ব্রাজিল ও ইংল্যান্ডে ২০০৬ বিশ্বকাপ চলাকালীন হাসপাতালের নথি সংগ্রহ করে নানা সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষায় উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী বিশ্বকাপ চলাকালীন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা গড়ে প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, যাঁরা খেলাধুলা দেখার সময়ে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা অনুভব করেছিলেন, তাঁরা বেশির ভাগই পুরুষ এবং ষাট বছরের বেশি বয়সি। উপরন্তু, ২০০৬ বিশ্বকাপের সময়ে জার্মানদের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, এই রোগীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক রোগীরই আগে থেকেই হার্টের সমস্যা ছিল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘‘ফুটবল নিয়ে সকলের মধ্যেই বেশ উত্তেজনা দেখছি। রাত জেগে অনেকেই খেলা দেখছেন।
যাঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে বা আগে থেকেই হার্টের রোগ আছে, তাঁরা খেলা দেখার সময়ে নিজের শরীরের যত্ন নিন। ছবি: শাটারস্টক।
তবে যাঁদের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা আছে, তাঁদের খেলা দেখার সময়ে একটু বাড়তি সতর্ক থাকতেই হবে। খেলার উত্তেজনায় যদি হার্টের ওষুধটা খেতে ভুলে যান, তা হলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে। আট ঘণ্টার ঘুমও খুব জরুরি। খেলা দেখতে গিয়ে যদি অনেকটা রাত হয়ে যায়, তা হলে ঘুমটা যেন সম্পূর্ণ হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে। খেলা মজার ছলে দেখুন, উপভোগ করুন। এ নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে বা আগে থেকেই হার্টের রোগ আছে, তাঁরা খেলা দেখার সময় নিজের শরীরের যত্ন নিন। খুব বেশি উত্তেজিত হবেন না!’’
খেলা দেখার সময়ে হার্টের রোগীরা কী কী খেয়াল রাখবেন?
১) খেলা দেখার সময়ে ভাজাভুজি মোটেও খাবেন না। মাখানা, পপকর্ন খেতে পারেন স্ন্যাকস হিসাবে।
২) এক জায়গায় দীর্ঘ ক্ষণ বসে খেলা দেখবেন না। মাঝেমাঝেই উঠে হাঁটাহাঁটি করুন।
৩) খেলা দেখার সময়ে নরম পানীয়ে চুমুক বা মদ্যপান নয়।
৪) প্রিয় দল হেরে গেলে বা খারাপ খেললে রাগ করবেন না। মনে রাখবেন, এটা নিছক খেলা, এর জন্য শরীরের ক্ষতি করার কোনও মানে নেই।