গরম সেঁক না ঠান্ডা, ফোলা চোখের জন্য কোনটি বেশি উপকারী। ছবি: ফ্রিপিক।
চোখ ফুলতে পারে বিভিন্ন কারণে। ঘুম কম হলে, মানসিক কারণে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ছাপ পড়তে পারে চোখে। তা ছাড়া জ্বর, ভাইরাস সংক্রমণ হলে চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠে। তখন অনবরত চোখ থেকে জল পড়ে, ব্যথা হয়। আবার ‘অ্যালার্জিক রাইনিটিস’ থাকলে সে কারণেও চোখ ফুলে যেতে পারে। তখন চোখে প্রচণ্ড চুলকানি হয়, চোখের নীচের অংশে ফোলা ভাব দেখা দেয়। বিষাক্ত পোকার কামড়েও ফুলতে পারে চোখ। তখন জ্বালাভাব আরও বেশি হয়। চোখ ফুলে গেলে কেবল আই ড্রপ দিয়ে আরাম হয় না। তখন সেঁক দিলে অনেকটা ব্যথা কমে। এখন প্রশ্ন হল, ঠান্ডা সেঁক দেবেন না কি গরম। দুই পদ্ধতিই ব্যথা-বেদনা কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু চোখের জন্য কোনটি উপকারী তা বুঝতে পারেন না অনেকেই। তা হলে চলুন জেনে নিই।
গরম সেঁক
চোখে দীর্ঘ দিন ধরে ফোলা ভাব থাকলে অথবা ক্লান্তি, কম ঘুমের জন্য চোখ ফুলে গেলে তখন গরম সেঁকই ভাল। ধরুন, চোখের নীচে ফোলা মাংসপিণ্ড রয়েছে, খুব ব্যথা, তখন গরম সেঁক দিন। তাপ লাগলে সেখানকার রক্তনালির প্রসারণ হবে, রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে। যদি রক্ত জমাট বেঁধে থাকে, তা হলে তা ছেড়ে যাবে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হলেই ফোলা ভাব কমে যাবে। ব্যথাও সেরে যাবে।
অনেক সময়ে চোখ চুলকালে বা চোখে আঘাত লাগলে প্রচণ্ড প্রদাহ হয়। তখন চোখ ফুলে ওঠে। তেমন হলেও গরম সেঁক খুব কাজে দেবে।
ঠান্ডা সেঁক
জ্বর, সংক্রমণজনিত কারণে চোখ ফুলে ওঠা, অ্যালার্জি হলে তখন ঠান্ডা সেঁক কার্যকরী। ধরুন, অ্যালার্জির কারণে চোখ লাল হয়ে গিয়েছে, জল পড়ছে তখন ঠান্ডা সেঁক দিন। পরিষ্কার সুতির কাপড়ে কয়েকটি বরফের টুকরো ভাল করে মুড়ে নিয়ে ফোলা জায়গায় দিতে হবে। ঠান্ডা সেঁক দিলে প্রথমে সেই জায়গার রক্তনালিগুলি সঙ্কুচিত হবে, তার পর ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়ে রক্ত চলাচল শুরু হবে। এতে ফোলা ভাব খুব দ্রুত মিলিয়ে যাবে। চোখের যন্ত্রণা, চুলকানিও কমে যাবে।
পোকামাকড়ের কামড়ে যদি চোখ ফুলে যায়, তা হলেও ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন। ‘ড্রাই আই’ বা চোখের আর্দ্রতা কমে গেলে তখন ভীষণ জ্বালা ভাব হয়, চোখ ফুলে যায়। বেশি ক্ষণ মোবাইল, টিভি বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রাখলে এমন হয়। তখন চোখের আরামের জন্যও ঠান্ডা সেঁক কার্যকরী। গোটা চোখের উপরেই বৃত্তাকারে ঠান্ডা সেঁক দিতে হবে অথবা এক জায়গায় চেপে ধরে থাকতে হবে।
চোখে যদি খুব বেশি জোরে আঘাত লাগে এবং চোখের নীচের অংশে কালশিটে পড়ে যায়, তখন গরম ও ঠান্ডা সেঁক মিলিয়ে দিতে হবে। প্রথমে ২০ সেকেন্ড গরম সেঁক দিয়ে তার পর ২০ সেকেন্ড ঠান্ডা সেঁক দিতে হবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। চোখের যে কোনও সমস্যাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল। যদি চোখে সংক্রমণ হয় বা ফোলা ভাব কমতে না চায়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান।