শিশুর তেল মালিশ করবেন কোন তেলে? ছবি: শাটারস্টক।
বাড়ির ছোট্ট শিশুদের তেল মালিশ করার রেওয়াজ বহু যুগ ধরেই চলে আসছে। সারা বছর তো বটেই, শীতকালে আরও বেশি করে শুরু হয় মালিশের পর্ব। স্নানের ঠিক আগে শিশুদের রোদে শুইয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত যত্ন নিয়ে তেল মালিশ করেন মা-ঠাকুমারা।
নিয়মিত শিশুদের তেল মালিশ করলে তাদের শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর হয়। শিশুদের খিদে বাড়ানোর জন্যও তেল মালিশ জরুরি। অনেক শিশু সারা ক্ষণ ঘ্যানঘ্যান করে, সেই প্রবণতাও কমে তেল মালিশ করলে। এই অভ্যাসের ফলে শিশুর সার্বিক বৃদ্ধি ভাল হয়। বাবা কিংবা মা তেল মালিশ করলে তাঁদের স্পর্শ অনুভব করে শিশু। শিশুর বৃদ্ধির জন্য এই ‘টাচ্ থেরাপি’র গুরুত্ব অনেক। ওদের রক্ত সঞ্চালনও ভাল হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে ছোট থেকে শিশুর শরীরে তেল মালিশ করলে ভবিষ্যতে তাদের এগ্জ়িমার মতো রোগের ঝুঁকি কমে।
আগেকার দিনে অবশ্য শিশুকে খাঁটি সর্ষের তেল মালিশ করানোরই চল ছিল। তবে ইদানীং অনেক বাড়িতেই মা ও ঠাকুমার মধ্যে এই তেল মালিশ করা নিয়ে দ্বন্দ্ব চোখে পড়ে। ঠাকুমাদের মতে সর্ষের তেলই নাকি সেরার সেরা, আর নতুন মায়েরা বলছেন নারকেল তেল দিয়েই নাকি মালিশ করা ভাল। তবে এই বিষয় চিকিৎসকদের কী মত?
চিকিৎসকদের মতে, সদ্যোজাতদের তেল মালিশের জন্য সর্ষের তেল ব্যবহার না করাই ভাল। চর্মরোগ চিকিৎসক সন্দীপন ধর বলেন, ‘‘সর্ষের তেল দিয়ে মালিশের সময় অনেক সময় তেল নাকে ঢুকে যায়। সর্ষের তেলের ঝাঁজে শিশুদের কষ্ট ও অস্বস্তি হতে পারে। তা ছাড়া এখন নির্ভেজাল সর্ষের তেল প্রমাণ করার জন্য তেল প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি বিভিন্ন ধরনের ঝাঁঝালো উপাদান ব্যবহার করে। সেই উপাদানগুলির জন্য শিশুর ত্বক জ্বালা করে, র্যাশও বেরোয়। এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সর্ষের তেলে অ্যালিল আইসো থায়োসায়ানাইট যৌগ থাকে, এই যৌগটি শিশুর ত্বকের জন্য মোটেও ভাল নয়।’’
সর্ষের তেলের বিকল্প কি নারকেল তেল?
চিকিৎসকদের মতে, সর্ষের তেলের বদলে শিশুর তেল মালিশের জন্য সবচেয়ে ভাল বিকল্প হতে পারে নারকেল তেল। অনেকেই শিশুর মালিশ করার জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহার করেন। তবে অলিভ অয়েলে থাকা অ্যালোয়িক অ্যাসিডও কোনও কোনও শিশুর শরীরে অ্যালার্জি কিংবা র্যাশের কারণ হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে শিশুর জন্মের পরের দিন থেকেই তার তেল মালিশ ও স্পঞ্জিং শুরু করে দেওয়া যায়। স্নানের আগে তেল মালিশ করে পরে ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করতে হবে।