ঋতুস্রাবের সময় শরীরচর্চা ভাল না কি খারাপ?
সুস্বাস্থ্য পেতে নিয়মিত শরীরচর্চা করা জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যায়ামের আবার ক্ষতিও আছে। এর জেরে ঋতুচক্রের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। অনিয়মিত ঋতুস্রাবের এই অসুখের নাম ‘আমেনোরিয়া’। শরীর যথেষ্ট বিশ্রাম কিংবা খাবার না পেলে এই সমস্যা হয়।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, শরীরের উপরে অতিরিক্ত চাপ পড়লে কর্মক্ষমতা কমে যায়। একই প্রভাব ফেলে খাদ্যের অভাবও। তখন কাজের শক্তি সঞ্চয় করতে চায় শরীর। তাতে হজমের প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। আর কমে যায় হরমোন তৈরিও। আর এই সবের প্রভাব পড়ে ঋতুচক্রের উপরে। সবটাই স্বাভাবিকের চেয়ে চলে ধীরে। ফলে যে ঋতুস্রাব প্রতি মাসে হওয়ার কথা, তা দেখা দেয় দু’মাস, তিন মাস অন্তর। তবে সব ধরনের শরীরচর্চায় এমনটা হয় না। খুব ভারী শরীরচর্চা ও কড়া ডায়েটের কারণে এমনটা হতে পারে।
অনেকের ক্ষেত্রেই আবার ভারী শরীরচর্চা করলে ঋতুস্রাবের সময় রক্তপাত স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়। এর কারণ হতে পারে ওজন হ্রাস। শরীরে মেদ থাকলে ইসট্রোজেন হরমোনের উৎপাদনের হার বেশি হয়। এই হরমোন ঋতুস্রাবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই হঠাৎ ওজন কমলে ঋতুস্রাবের সময় হালকা রক্তপাত হতে পারে।
প্রতীকী ছবি।
অনেক মহিলার আপাত ভাবে আনন্দও হতে পারে এই ব্যবস্থার কথা জেনে। মাসে মাসে ঋতুস্রাবের ঝঞ্ঝাট তো সামলাতে হবে না। কিন্তু নিয়মিত এমন চললে তা মোটেই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। হাড়ের স্বাস্থ্য নির্ভর করে ইসট্রোজেন নামক হরমোনের উপরে। ঋতুচক্র অনিয়মিত হলে ইসট্রোজেনও কম তৈরি হয় শরীরে। তার ফলে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
তবে ‘আমেনোরিয়া’ এক বার হলে যে সারা জীবন এমন চলবে, তা নয়। খাদ্যাভ্যাস বদলালে এবং ব্যায়ামের সময় কমালে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা যায় এই সমস্যা। চিকিৎসকদের মতে, ঋতুস্রাব চলাকালীন হালকা ব্যায়াম কিংবা যোগাসন করলে কিন্তু ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা খেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে খুব বেশি ভারী শরীরচর্চা এ সময়ে না করাই শ্রেয়।