ছোট্ট খুদে ফিরে পেল নয়া জীবন। ছবি: সংগৃহীত।
মাত্র ১৮ মাস বয়সে দু’বার হার্ট অ্যাটাক, অবশেষে চেন্নাইয়ে এসে নবজীবন পেল বুলগেরিয়ার শিশু। বুলগেরিয়া থেকে হার্টের চিকিৎসার জন্যই শিশুটিকে বিমানে করে চেন্নাইয়ে নিয়ে আসছিলেন তার বাবা-মা। এরই মাঝে এক বার বিমানের মধ্যে এবং আর এক বার চেন্নাইয়ের হাসপাতালে হার্ট অ্যাটাক হয় তার। শেষমেশ চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় চেন্নাইয়ের সেই হাসপাতালেই খুদের ‘ওপেন হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের’ অস্ত্রোপচার সফল হয়।
প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকেরা ‘বার্লিন হার্ট’ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ‘বার্লিন হার্ট’ হল হৃদ্যন্ত্রের একটি বিকল্প যা বহিরাগত আর্টিকুলেটেড পাম্প হিসাবে কাজ করে। কিন্তু হাসপাতালটি শেষে মুম্বই থেকে এক শিশুর হৃৎপিণ্ডও পেয়ে যায়। যা পাওয়া ছিল বেশ কষ্টসাধ্য কাজ। সেটি পাওয়ার পর অস্ত্রোপচার করে বুলগেরিয়ার এই শিশুর শরীরে হৃদ্যন্ত্রটি প্রতিস্থাপিত করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, এই অস্ত্রোপচারটি ঠিল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে তাঁরা সফল হয়েছেন, সুস্থ রয়েছে সেই খুদে। সবটার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক বালাকৃষ্ণন বলেন, ‘‘শিশুর শরীরের অবস্থা তখন বেশ সঙ্কটজনক ছিল। আমরা নানা উপায়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায় ছিলাম। সেই মুহূর্তেই মুম্বই থেকে একটি ফোন এল হাসপাতালে। আমাদের কাছে খবর এল মুম্বইয়ে ঠিক ১৮ মাস বয়সি এক শিশুরই হৃদ্যন্ত্রের হদিস পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনাকে চমৎকার বললেও ভুল হবে না। এ দেশে সাধারণত উপযুক্ত প্রাপকের অনুপস্থিতির কারণে এত ছোট কোনও শিশুর অঙ্গ ব্যবহার করা হয় না। এ ক্ষেত্রে সেটাই কাজে লাগল।’’
যে শিশুর হৃদ্যন্ত্রটি পাওয়া গিয়েছিল, তার রক্তের গ্রুপ বুলগেরিয়াবাসী শিশুর সঙ্গে মিলছিল না। তাই চিকিৎসকরা ‘এবিও ইনকমপ্যাটিবল ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন’ পদ্ধতি মেনে অস্ত্রোপচার করেন বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
১৮ মাস বয়সি ক্রিসি এবং তার মা ইভাঞ্জেলিনা ৬ জুলাই বুলগেরিয়া থেকে চেন্নাই আসেন। ইভাঞ্জেলিনা জানান, এই যাত্রাটি তাঁর কাছে ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। ইভাঞ্জেলিনা বলেন, ‘‘মেডিক্যাল ট্রান্সফারের আয়োজন করা ছিল বেশ সময়সাপেক্ষ। অথচ মেয়ের হাতে সময় খুবই কম ছিল। যাত্রার মাঝে ভেন্টিলেটরে দু’বার ক্রিসির হৃদ্যন্ত্র কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। চেন্নাইয়ে এসে মাত্র সাত দিনের মধ্যে ওর বয়সি এক জনের হৃদ্যন্ত্রের খোঁজ পাওয়ার ঘটনা আমার কাছে সত্যিই খুব বিস্ময়ের।’’