অবসাদ কাটাতে কার সাহায্য নিয়েছিলেন আলিয়া? ছবি: সংগৃহীত।
শরীর খারাপ হলে বাইরে থেকে তা বোঝা যায়, কিন্তু মন? সেটিই যে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত! মনের কষ্ট মনে চেপেই দিনের পর দিন কাজ করে চলেন অধিকাংশ মানুষ। যার ফল কখনওই ভাল হয় না। সে কথাই সবাইকে আরও এক বার মনে করিয়ে দিলেন অভিনেত্রী আলিয়া ভট্ট।
ইংরেজিতে এই সমস্যাকে বলে ‘পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন’। শিশুর জন্মের পরে চারপাশের অনেক কিছুই বদলে যায়। মায়েদের জীবন একেবারেই সন্তানকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। এত বদলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চাপ অনেক ক্ষেত্রে ডেকে আনে অবসাদ। সন্তানের জন্মের পরে ক্লান্তি অনেকের মধ্যেই আসে। কিন্তু তা যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে, তবে ভেবে দেখা প্রয়োজন। এই অবসাদের উপসর্গ এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। কারও খিদের বোধ কমে যায়, কারও আবার দ্রুত ওজন কমতে থাকে। সর্ব ক্ষণ মনখারাপ, ঘুম না আসা, বিনা কারণেই অপরাধবোধ এবং বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে।
মেয়ে রাহার জন্মের পর এই একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন আলিয়া। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই বিষয় নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন। আলিয়া বলেন, ‘‘মেয়ে হওয়ার পর আমার সারা ক্ষণ মনে হত, রাহাকে লালন-পালনের পদ্ধতি ঠিক হচ্ছে তো? আমি ঠিক মতো সব করতে পারছি তো? লোকজন কী ভাবছে? কেউ এই বিষয় কোনও কথা না বললেও আমি সারা ক্ষণ এই সব নিয়েই ভাবতে থাকতাম। এই উদ্বেগ দূর করতে আমি প্রতি সপ্তাহে থেরাপি নিতে যেতাম। থেরাপির পর বুঝতে পারলাম, মাতৃত্ব এক দিনে শেখার বিষয় নয়, রোজ কিছু না কিছু শেখার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কাউকে অনুকরণ করলে হবে না। কারও কাছে এ বিষয়ের সব উত্তর নেই। নিজেকেই ধীরে ধীরে শিখতে হবে।’’
মেয়ে রাহার সঙ্গে আলিয়া। ছবি: সংগৃহীত।
অনেক মহিলাই এই ধরনের অবসাদে ভোগেন, অথচ তা মুখ ফুটে বলে উঠতে পারেন না। ভিতরে ভিতরে গুমরে মরেন। অনেক সময় নিজেও বিশ্বাস করতে পারেন না। কিন্ত এমন পরিস্থিতি সত্যিই তৈরি হতে পারে। চেপে না রেখে চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া জরুরি। এর কিছু থেরাপিও আছে। উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে এই অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। আলিয়া বলেন, ‘‘লকডাউনের সময় আমি প্রথম বার মেন্টাল থেরাপি নিতে শুরু করি। তখন একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম, তাই সেই সময়টাকেই থেরাপি নেওয়ার জন্য আদর্শ মনে হয়েছিল। যখন শুরু করলাম, তখন আরও অনেক রকম সমস্যার কথা বেরিয়ে এল, যা হয়তো নিজেই জানতাম না। আমি যে হেতু অভিনেত্রী, আমাকে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয়, তাই রাহার জন্মের পর ওজন নিয়ে বেশ ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলাম। তখন শরীরচর্চা, ডায়েটের পাশাপাশি মনকে শান্ত রাখতে থেরাপির সাহায্য নিয়েছিলাম।’’