ছোট থেকেই ডায়াবিটিস? কী খাওয়াবেন কিশোরীকে? ছবি: ফ্রিপিক।
ডায়াবিটিস এখন হানা দিচ্ছে কমবয়সিদের শরীরেও। কিছুদিন আগেই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষা জানিয়েছিল, কমবয়সি ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। সে ক্ষেত্রে ছোট বয়স থেকেই ইনসুলিন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ছে আক্রান্তদের। আইসিএমআরের সমীক্ষা আরও জানাচ্ছে, দেশে গত তিন দশকে ডায়াবিটিস রোগীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।
মূলত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, খেলাধুলোর অভাব, অতিরিক্ত ‘ফাস্ট ফুড’ খাওয়ার জন্য ছোটরা স্থূলতার শিকার হচ্ছে। যার ফলে দেখা দিচ্ছে টাইপ-১ ডায়াবিটিস। মূলত বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই হানা দিচ্ছে এই রোগ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই যদি সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায় ও নিয়ম করে শারীরিক কসরত করে ছোটরা, তা হলে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকবে না। তবে যারা ইতিমধ্যেই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত তাদের খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিতেই হবে।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, দ্রুত রোগা হওয়ার জন্য ক্র্যাশ ডায়েট করছে অনেক কিশোরীরা। ফলে তাদের পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। আবার ছোট থেকেই নানা বিষয়ে চিন্তাভাবনা, মানসিক চাপের কারণে ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ক্ষরণ বাড়ছে। ফলে ইনসুলিন নিঃসরণ কমে যাচ্ছে। যে কারণে রক্তে শর্করা জমতে শুরু করছে। আবার এমনও দেখা যায়, ডায়াবিটিসের সঙ্গে ‘সিভিয়ার হাইপোগ্লাইসেমিয়া’ হচ্ছে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে যাচ্ছে। তখন খিদে পেতে শুরু করছে। আর ওই সময়ে বেশি ভাজাভুজি বা তেলমশলা দেওয়া খাবার খেয়ে ফেললেই মুশকিল। কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের মধ্যে ভারসাম্য রেখে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, প্রাতরাশ ভাল করে করতে হবে। মাখন, ঘি, মিষ্টি, সব রকমের মিষ্টিস্বাদযুক্ত খাবার যেমন, চিনি, মধু, গুড়, লজেন্স, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, ফলের রস, নরম পানীয় খাওয়া চলবে না। দুধ খেতে হলে ডবল টোনড দুধই খেতে হবে। রুটি, সুজি, চিঁড়ে, কর্নফ্লেক্স, ব্রাউন ব্রেড খাওয়া যেতে পারে সকালে। মিড মর্নিংয়ে খেতে হবে যে কোনও রকমের মরসুমি ফল। বিস্কুট খাওয়া একেবারেই চলবে না। ডায়াবিটিক ডায়েটের মূল মন্ত্র, প্রাতরাশ ভারী হবে, দুপুরের খাবার মাঝারি ও রাতের খাবার হালকা। ডায়াবেটিক রোগীরা বেশি ক্ষণ খালি পেটে থাকলেই বিপদ। দুটো খাবারের মাঝে শসার সঙ্গে টক দই, ডিম সেদ্ধ, ছোলা, ছাতু, মাখানা— এই সব খাওয়া যেতে পারে। সারাদিনে যদি ৫০ গ্রাম প্রোটিন থাকে, তা যেন চারটি মিলে ভাগ করা থাকে। বেশি করে খেতে হবে সবুজ শাকসবজি ও ফল। কার্বোহাইড্রেট যতটা কম খাওয়া যায় ভাল।