ডিম খেলে কি ব্রণ বাড়তে পারে? ছবি: সংগৃহীত
সকালের তাড়াহুড়োয় এলাহি জলখাবার বানানোর সময় নেই। তাই অনেক বাড়িতেই চটজলদি সমাধান ডিম! ডিমের নানা পদ বিশ্বজুড়ে মানুষ জলখাবারে খেতে পছন্দ করেন। শিশুরাও খুব একটা ঝামেলা না করেই খেয়ে নেয়। ডিমে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ক্যালশিয়াম থাকে, পাশাপাশি ক্যালোরিও কম, তাই ডিমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কিন্তু সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে, ডিম খেলে ব্রণর সমস্যা বাড়তে পারে। তা কতটা সত্যি, কতটা গুজব, যাচাই করে নেওয়া যাক।
ডিম খেলে কাদের ব্রণ হতে পারে
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কারও কারও ডিম খেলে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা তৈরি হতেই পারে। তবে সকলের একই ধরনের সমস্যা হবে, তা নয়। কত ঘন ঘন ডিম খাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করবে সমস্যা কতটা জটিল হবে। তবে কেন হচ্ছে, সে কারণ এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম হতেই পারে।
ডিম খেলে এক এক জনের শরীরে এক এক রকম প্রভাব ফেলে। ছবি: সংগৃহীত
কেন ডিম খেলে ব্রণ বেশি হয়
১। ডিমে কিছুটা আয়োডিন থাকে। মূলত সেই কারণেই ব্রণ হতে পারে। কিন্তু যেই কারণে আয়োডিন থাকায় ব্রণ হচ্ছে, সেটি কিন্তু শরীরের পক্ষে আদতে উপকারী। বিভ্রান্তি হতেই পারে। আর একটু সহজ করে বলা যাক। আয়োডিন শরীরে জমে থাকা ফ্লুয়োরাইড বার করে দেয়। এই ফ্লুয়োরাই়ড এমন এক দূষিত খনিজ যা শরীর থেকে সহজে বার হতে চায় না। কিন্তু আয়োডিন তা তা়ড়াতে পারে সহজেই। যখন ফ্লুয়োরাইড শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, তা সাধারণত ব্রণ বা ত্বকের মৃত কোষ হয়েই বেরোয়।
২। ডিম খেলে শরীরে প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যেহেতু শরীরের নিজস্ব প্রোজেস্টেরন উৎপাদনের ক্ষমতা থাকে, তাই বেশি মাত্রায় হয়ে গেলে, হরমোনে তারতম্য হতে পারে। তাতেই ব্রণর সমস্যা বাড়ে।
৩। ডিমে অতিরিক্ত মাত্রায় বায়োটিন থাকে। এমনিতে বায়োটিন ত্বক এবং চুলের জন্য খুব উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত বোয়োটিন শরীরে কেরাটিনের মাত্রা বাড়িয়ে হাইপারকেরাটোসিস বাঁধাতে পারে। তাতেই মুখ ভর্তি ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
৪। অ্যালবামিন এক ধরনের প্রোটিন, যা আমাদের শরীরে লিভার তৈরি করে। কিন্তু বাইরে থেকে এই প্রোটিন শরীরে গেলে তা হজম করা খুব মুশকিল হয়ে পড়ে। ডিমে যেহেতু অ্যালবামিন রয়েছে, তাই বাঁধে গোলমাল। ব্রণ হওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।
কী করে বুঝবেন ডিম থেকেই ব্রণ হচ্ছে
যদি দেখেন শরীরে অন্য কোনও গোলমাল না থেকেই মুখে একের পর এক ব্রণ হয়েই যাচ্ছে, তা হলে ডিমের উপর সন্দেহ করতেই পারেন। নিশ্চিত হওয়ার সহজতম উপায়— অন্তত তিন সপ্তাহ ডিম খাওয়া বন্ধ করে দিন। যদি দেখেন ত্বক পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে এবং নতুন করে আর ব্রণ বেরোচ্ছে না, তা হলেই বুঝবেন যত গোলমালের মূল ডিমই।