শরীর ভাল রাখতে সামনে নয়, পিছনে হাঁটাও অভ্যাস করুন। ছবি: সংগৃহীত।
সকাল শুরু হোক প্রাতঃভ্রমণে, বলেন চিকিৎসকরা। প্রতি দিন হাঁটহাঁটিতে শরীর ও মন দুই-ই ভাল থাকে, সকলেই জানেন। কিন্তু কখনও উল্টো হেঁটেছেন কি? ছোটবেলায় হয়তো খেলার ছলেই এমনটা করলেও করতে পারেন, কিন্তু বড় বয়সে?
ভাবছেন, এ কেমন মজা! একেবারেই নয়। বরং পিছন দিকে হাঁটাও কিন্তু এক ধরনের শরীরচর্চা। একে বলা হয় ‘রেট্রো ওয়াকিং’। হার্ট থেকে ফুসফুস ভাল থাকে এতে। বজায় থাকে শরীরের ভারসাম্য। ভাল হয় পেশির গড়ন।
কেন হাঁটবেন পিছন দিকে?
১. আমরা সামনে হাঁটতে অভ্যস্ত, পিছনে নয়। ফলে পিছনে হাঁটা শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। পিছনে হাঁটার ফলে পায়ের পেশি অন্য ভাবে অন্য দিকে সঞ্চালিত হয়। এতে পেশিও মজবুত হয়। পুরো বিষয়টিতে মস্তিষ্কের সঙ্গে সমন্বয়ের দরকার হয়। ফলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার সঙ্গেও তা জুড়ে যায়। বয়স্ক মানুষদের অনেক সময় শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকে না। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান। তাঁদের জন্য ধীরে ধীরে উল্টো হাঁটার অভ্যাস উপকারী হয়ে উঠতে পারে।
২. গবেষণা বলছে, সামনের চেয়ে পিছনের দিকে হাঁটলে শক্তি ক্ষয় বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে বেশি শক্তির দরকার হয়। তার কারণ, উল্টো হাঁটায় ভারসাম্য রক্ষা বড় বিষয়। সেই কাজ করতে গিয়ে একাধিক পেশিও সক্রিয় হয়ে ওঠে। যাঁরা ওজন ঝরানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরাও প্রতি দিনের শরীরচর্চায় পিছনের দিকে হাঁটা অভ্যাস করতে পারেন। পিছনে হাঁটায় হৃদ্স্পন্দন বাড়ে দ্রুত। ফলে হদ্যন্ত্র ভাল রাখতে সামনে হাঁটার চেয়েও পিছনে হাঁটা বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে।
৩. এমন হাঁটা শরীর ও মস্তিষ্কের ভারসাম্য বজায় রাখে। পিছনে হাঁটার ফলে ভারসাম্য রক্ষার জন্য মস্তিষ্ককে বিশেষ ভাবে সক্রিয় হতে হয়। পিছনে হাঁটার জন্য বাড়তি মনোযোগের দরকার হয়। যা মস্কিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
৪. অস্থিসন্ধিতে অনেকের ব্যথা ও সমস্যা থাকে। উল্টো দিকে হাঁটলে হাঁটু বা অস্থিসন্ধিতে তুলনায় কম চাপ পড়ে।
সাধারণত আমরা যা করি না, সেটা করায় বাড়তি মজা রয়েছে। প্রতি দিন শরীরচর্চা একঘেয়ে হয়ে গেলে উল্টো দিকে হাঁটতে পারেন।
কী ভাবে করবেন অভ্যাস
উল্টো দিকে হাঁটতে গিয়ে পড়ে যাওয়া বা ধাক্কা খাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ফাঁকা ও নিরাপদ জায়গায় ধীর ধীরে অভ্যেস শুরু করেন। প্রথমে কয়েক পা হাঁটা দিয়ে শুরু করুন। পরে উল্টো হাঁটার সময় বৃদ্ধি করুন। এ ক্ষেত্রে রাস্তায় না হেঁটে, মসৃণ জমি আছে, এমন কোনও জায়গায় হাঁটলে তুলনায় ঝুঁকি কম। সেটা হতে পারে কোনও পার্ক বা মাঠ। কোনও রাস্তা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। তবে হাঁটার আগে জমিটি একটু পরখ করে নিন। কোনও গর্ত ইত্যাদি আছে কিনা? তার পর হাঁটুন।