আশিস চঞ্চলানি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
ইউটিউবার আশিস চঞ্চলানি চাইতেন অভিনেতা হতে। স্কুলে শিক্ষকদের গলা নকল করে তিনি বন্ধুদের মনোরঞ্জন করতেন ছোটবেলায়। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অভিনেতার গলাও নকল করতেন। অভিনয়ের ‘ভূত তাড়াতে' আশিসকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করিয়ে দেন তাঁর বাবা। এর পর ২০১৪ সালে কলেজে পড়ার সময়েই একটি ইউটিউব ভিডিয়ো দেখে চ্যানেল খোলার সিদ্ধান্ত নেন আশিস। ওই বছরই তিনি তাঁর প্রথম ইউটিউব ভিডিয়ো আপলোড করেন। এখন ভারতীয় ইউটিউবারদের মধ্যে প্রথম দশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন আশিস। ইউটিউবের জন্য কমিক ভিডিয়ো বানান তিনি। তবে সম্প্রতি তাঁর ভিডিয়ো নিয়ে নয়, তাঁর ভোলবদল নিয়ে চারদিকে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। গোলগাল চেহারা উধাও, ৪০ কেজি ওজন ঝরিয়ে এখন বলিউডের অভিনেতাদের টেক্কা দিচ্ছেন আশিস।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আশিস তাঁর এই ভোলবদল নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে অভিনেতা শাহরুখ খান আমার ভুঁড়ি ধরে বলেন আশিস তোমায় ওজন ঝরাতেই হবে। যাঁরা নিজের শরীরের তোয়াক্কা করে না, আমি তাদের একদম পছন্দ করি না। বিশ্বাস করো, রোগা হয়ে গেলে তোমা্কে আরও মিষ্টি লাগবে দেখতে। তিনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে এই কথা বলেছিলেন। সেই দিন প্রথম আমার মনে হয়েছিল আমার চেহারাও ভাল হতে পারে, আমাকেও অন্যদের মতো সুন্দর দেখতে লাগতে পারে। তবে সেই পথে হাঁটতে ৮টা বছর সময় লেগে যায়।’’
৪০ কেজি ওজন ঝরানোর পথ কতটা কঠিন ছিল? আশিসের জবাব, ‘‘রাতের দিকে লোভ সামলানো আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। রাতের দিকে আমার ভয়ঙ্কর খিদে পেত। কখনও কখনও আমার নিজেকে ‘হাল্ক’ মনে হত। চিপ্স আমার ভীষণ প্রিয় খাবার। পিৎজ়া, বার্গার, মিষ্টি ছেড়ে দিতে পারলেও চিপ্স কোনও মতেই আমি ছাড়তে পারতাম না। এখনও চিপ্সের কথা বললে আমার জিভে জল আসে। শেষমেশ রাতের দিকে এই খিদে সামলাতে আমি মশলা দিয়ে দইয়ের ঘোল খেতে শুরু করি।’’
তবে শুধু ডায়েটে বদল এনে নয়, ওজন ঝরাতে আশিস কিন্তু শরীরচর্চাও করেছেন। আশিস বলেন, ‘‘শুনতে অবাক লাগলেও আমি ক্যাপ্টেন আমেরিকার মতো শরীর বানাতে চাই। তাঁর মতো সুপারহিরোর বডি তৈরি করাই আমার স্বপ্ন। আমার ফোনের ওয়ালপেপারেও ক্যাপ্টেন আমেরিকার ছবি। আমি সকালে উঠে ওই ছবি দেখেই অনুপ্রেরণা পাই।’’
ওজন ঝরিয়ে এখন একদম ফিট আশিস। তবে এই চেহারা ধরে রাখার জন্য কী করছেন তিনি? ইউটিফবার বলেন, ‘‘আমি কড়া রুটিন মেনে চলি এখন। ১৫ দিন কড়া ডায়েট করি, তার পর এক দিন ‘চিট ডে’ করি, সে দিন পানিপুরি, ছোলা-বাটুরে খাই। তবে মজার ব্যাপার হল এখন আর উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রতি আমার কোনও আগ্রহ নেই। মাঝেমধ্যে ২০ দিন পরেও ‘চিট ডে’ করি, কোনও অসুবিধা হয় না।
ওজন ঝরানোর পর কী কী বদল এসেছে আশিসের জীবনে? ইউটিউবার বলেন, ‘‘আমার ত্বক আগের থেকে অনেক বেশি ভাল হয়ে গিয়েছে। আগে বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও বেরোলে অল্পেই হাঁপিয়ে পড়তাম। তবে, এখন সবটা বদলে গিয়েছে। এখন আমি কোনও রকম সমস্যা ছাড়াই ট্রেকিং করি। আগে ৮ ঘণ্টা ঘুমের পরেও যেন ক্লান্ত লাগত, এখন ৫-৬ ঘণ্টার ঘুমেই শরীর একেবারে চাঙ্গা লাগে। রোগা হওয়ার পর শরীরে যেন অন্য রকম শক্তি সঞ্চারিত হয়েছে।’’