চিজা বীজে কি আদৌ ওজন কমে? ছবি:সংগৃহীত।
ইদানীং অনেকের হেঁশেলেই ঠাই পেয়েছে চিয়া বীজ। ওট্সের সঙ্গে চিয়া সিড, দইয়ের সঙ্গে চিয়া সিড, চিয়া সিড পুডিং, কুকিজে চিয়া সিড— রোজের খাবারে অনেকেই রাখছেন চিয়া দিয়ে তৈরি হরেক রকম স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। চিয়া বীজে এত ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে যে, এই খাবারকে ‘সুপারফুড’এর অ্যাখ্যা দিয়েছেন অনেকেই। চিয়া সিড নিয়ে হইচই এত বেশি যে, দিন দিন এই বীজের দামও বাড়ছে। ফ্ল্যাক্সসিড বা অন্যান্য বীজের তুলনায় চিয়ার দাম অনেকটাই বেশি। তবুও বাজারে গেলেই ব্যাগে এই বীজ স্থান পাচ্ছে। বাদ দিচ্ছেন না মধ্যবিত্তও।
অনেকেই ওজন ঝরানোর আশায় এই বীজ খান। তবে এই বীজ খেলে কী সত্যিই ওজন কমে? মেদ ঝরার সঙ্গে সরাসরি চিয়ার বীজের কোনও রকম বৈজ্ঞানিক যোগসূত্র এখনও পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই চিয়া সিড নিয়মিত খাওয়ায় সুফল পেয়েছেন। তবে তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন কড়া ডায়েটের মধ্যে। কিন্তু সেই সব সমীক্ষাই অত্যন্ত ছোট পরিসরে করা এবং খুব দীর্ঘমেয়াদিও নয়।
চিয়া বীজের যে নানা রকম পুষ্টিগুণ রয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। চিয়া ভেজানো জল খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি থাকে এবং বার বার খাওয়ার প্রবণতাও কমে। খাবার খাওয়ার আগে এক টেবিল চামচ চিয়া সিড জলে গুলে সেই জল খেয়ে নিলে পেট ভর্তি হয়ে যাওয়ায় খেতে বসে বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। কেবল ওজন ঝরাতেই নয়, হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এই বীজ উপকারী। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের পক্ষে বেশ ভাল।
জলে চিয়া সিড অন্তত আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে সেটা ফুলে একটু জেলির মতো হয়ে যায়। এই পানীয় শুধুই খেতে পারেন। তবে শুধু জলে খেতে ইচ্ছা না করলে শরবত বা স্মুদির মধ্যেও চিয়া বীজ খাওয়া যায়। কুকিজ বা মাফিন তৈরি করার সময় চিয়া বীজ ব্যবহার করতে পারেন। শুকনো চিয়া বীজও স্যালাড বা ওটসের উপর ছড়িয়ে খেতে পারেন।
পুষ্টিবিদদের মতে, এই বীজ খেলেই যে তার গুণে আপনার ওজন ঝরে যাবে, এমন ধারণা ভুল। তবে এই খাবারটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। পরোক্ষ ভাবে এই বীজ আপনার ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। তাই রোজের খাবারে রাখতেই পারেন চিয়া বীজ।