জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ফাইবার— এমন অসংখ্য স্বাস্থ্যকর উপাদানের সমৃদ্ধ উৎস হল ডুমুর। ছবি: সংগৃহীত
শীতকালে যে ফলগুলি যত্ন নেয় শরীরের, তার মধ্যে অন্যতম হল ডুমুর। শুনে অনেকেই বিস্মিত হতে পারেন। কারণ ডুমুরের যে গুণ থাকতে পারে, তা অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না। এমনিতেই সারা বছর ডুমুরের দেখা মেলে না। তার উপর যেটুকু সময়ে বাজারে মেলে, রংবেরঙের মরসুমি সব্জি ছেড়ে কেউ আর ডুমুরের দিকে সে ভাবে ফিরে তাকান না। ডুমুরের প্রতি এই অবহেলা কিন্তু ঠিক নয়। আখেরে ক্ষতি হচ্ছে আপনারই।
ডুমুরের পুষ্টিগুণ সত্যিই অবাক করার মতো। জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ফাইবার— এমন অসংখ্য স্বাস্থ্যকর উপাদানের সমৃদ্ধ উৎস হল ডুমুর। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর ডুমুর শরীরের যত্ন নেয় ভিতর থেকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডুমুর ভেজানো জল আরও বেশি উপকারী। ডুমুরের রয়েছে আরও কিছু অজানা স্বাস্থ্যগুণ।
ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করে
ডায়াবিটিসের সমস্যা নিয়ে নাজেহাল? তা হলে নিশ্চিন্তে ভরসা রাখতে পারেন ডুমুরের উপর। এতে ভরপুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে, যা শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া ডুমুরে উপস্থিত ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তে শর্করার মাত্রা বিপদসীমার বাইরে রাখতে সাহায্য করে। টাইপ টু ডায়াবিটিসে যাঁরা ভুগছেন, এই ফল ভিজিয়ে খেলে বাড়তি উপকার পাবেন। ডায়াবিটিক রোগীদের অনেক কিছু খাওয়া বারণ থাকে। রোজের পাতে না হলেও মাঝেমাঝে নিশ্চিন্তে স্বাদ নিতে পারেন ডুমুরের।
ডুমুরের পুষ্টিগুণ সত্যিই অবাক করার মতো। ছবি: সংগৃহীত
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায়
জল কম খাওয়া, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতার মতো কিছু কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন বহু মানুষ। অনেক চেষ্টা করেও এই সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি না পেলে, সুস্থ থাকতে ভরসা রাখতে পারেন ডুমুরের উপর। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিমেষে দূর করে। পেট ভাল রাখতেও ডুমুর খুব উপকারী।
মেদ ঝরাতে
ওজনও কমাতে পারে ডুমুর। এই গুণটির কথা অনেকেই জানতেন না। কিন্তু মেদ ঝরাতে দারুণ উপকারী ডুমুর ফল। এতে ফাইবার ভরপুর পরিমাণে রয়েছে। ওজন বেড়ে যায় মূলত খাবার ঠিক করে হজম না হওয়ার কারণে। ফাইবার সেই হজমজনিত সমস্যার সমাধান করে। ফলে হজম হয় দ্রুত। এর ফলে মেদও জমতে পারে না। তবে ওজন কমাতে পারে বলেই বেশি করে ডুমুর খাবেন না। কারণ এতে ক্যালোরির পরিমাণও বেশি। তাই হিতে বিপরীত হতে পারে।
হাড়ের যত্নে ডুমুর
শীতকালে হাড় মজবুত রাখতে চাইলে খেতে পারেন ডুমুর। ক্যালশিয়ামের সমৃদ্ধ উৎস হল ডুমুর। শরীর নিজে থেকে ক্যালশিয়াম তৈরি করে না। ফলে বাইরের উৎসই একমাত্র ভরসা। দুধ, দই, দুগ্ধজাতীয় খাবার ছাড়াও ডুমুর ক্যালশিয়ামের নির্ভরযোগ্য উৎস হতে পারে।