—প্রতীকী ছবি।
পৃথিবীতে যত রোগ আছে, তার মধ্যে বেশির ভাগের উৎস না কি স্থূলত্ব। অনিয়ন্ত্রিত ওজন। সে কথা ভেবেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পছন্দের অনেক খাবার ছুঁয়েও দেখেন না বহু মানুষ। আবার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, এমন ধারণা থেকেও অনেক সব্জি খান না। খাওয়াদাওয়া এবং রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা চলে। তেমনই বেশ কয়েকটি গবেষণা বলছে, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ভয়ে বিট, গাজর, মিষ্টি আলুর মতো মাটির তলায় জন্মানো সব্জি বা কন্দ খান না অনেকেই। কিন্তু এই সব্জিগুলি আসলে দেহের বাড়তি ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা থেকে বিপাকহার উন্নত করা— সবের উপরেই প্রভাব ফেলতে পারে মাটির তলায় জন্মানো বা কন্দজাতীয় সব্জি।
ওজন ঝরাতে কোন কোন সব্জি খেতে পারেন?
১) মিষ্টি আলু
শুক্তো রান্নার অন্যতম উপকরণ রাঙালু বা মিষ্টি আলু। বিভিন্ন রকম ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজের গুণে ভরপুর এই আলু খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে এবং মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বশে রাখতে পারে রাঙালু।
২) মুলো
শীতকাল এলেই বাজারে দেখা মেলে এই সব্জির। স্যালাড হোক বা পাঁচমেশালি তরকারি— মুলো না দিলে চলবে না। ফাইবারে সমৃদ্ধ এই সব্জি খেলে অনেক ক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকে। তাই বারে বারে খিদে পায় না। পরিমাণে বেশি ক্যালোরি শরীরে প্রবেশ করার ভয়ও থাকে না।
৩) গাজর
চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গাজর খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে ওজন ঝরাতেও গাজরের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। গাজরের মধ্যে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিনের মতো উপাদান, যা বাড়তি মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
৪) বিট
রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে বিট। যাঁদের রক্তচাপ কমতির দিকে, তাঁদের ক্ষেত্রেও বিট উপকারী। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওজন বশে রাখতেও বিটের ভূমিকা রয়েছে।
৫) শালগম
ওজন ঝরানোর প্রধান শর্ত হল, ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনা। তাই ওজন ঝরাতে চাইলে এমন খাবার খেতে হবে, যেগুলিতে ক্যালোরির পরিমাণ কম। শালগম তাদের মধ্যে অন্যতম। শালগমে যে পরিমাণ ফাইবার রয়েছে, তা অনেক ক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি রাখতে পারে।
৬) মানকচু
ওজন ঝরাতে চাইলে বিপাকহার ভাল হওয়া প্রয়োজন। যা সাধারণত অন্ত্র থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, মানকচুর মতো কন্দজাতীয় খাবার অন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে। ফলে পরোক্ষ ভাবে বিপাকহারের উপর তার প্রভাব পড়ে।
৭) ওল
ওল খেও না, ধরবে গলা। ছড়া যা-ই বলুক, নিয়ম মেনে খেলে কিন্তু এই ওলই আবার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করতে পারে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ওলের মধ্যে যে পরিমাণ ফাইবার রয়েছে, তা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। তা ছাড়া অনেক ক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি রাখতে সাহায্য করে ওল। তাই গরম ভাতে ওল সেদ্ধ কিংবা ওলের ডালনা— সবই খাওয়া যায়।