অতিরিক্ত ওজনের কারণে দু’বার হার্ট অ্যাটাক হয় অ্যামির। ছবি: সংগৃহীত
শরীরের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ খানিকটা বেশি হলে জীবন এক ভাবে চলে। পরিশ্রম করে বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেললেই জীবনের গতিপথ যেন বদলে যায়। তেমনটাই মনে করেন আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সি অ্যামি স্মিথ। ছোট থেকেই অতিরিক্ত ওজনের জন্য লোকের ব্যঙ্গের শিকার হতেন। সেই মুহূর্তে খারাপ লাগলেও পরে তা ভুলে যেতেন। সেই সময়ে ওজন কমানোর গুরত্ব তিনি বোঝেননি। যখন বুঝলেন, তখন শরীর এবং জীবনের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে অনেক।
অতিরিক্ত ওজনের কারণে দু’বার হার্ট অ্যাটাক হয় অ্যামির। সেই সঙ্গে শরীরে বাসা বাঁধে আরও অনেক রোগ। ক্রমশ স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে চলে যাচ্ছিলেন তিনি। আর পাঁচ জনের মতো সমান গতিতে তাঁর জীবন চলছিল না। অতিরিক্ত ওজনের কারণে অ্যামির চলাফেরা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। খাট থেকে ওঠানামা করতেও সাহায্য নিতে হত। এরই মাঝে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। চিকিৎসকদের সহযোগিতায় সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। মা হওয়ার পর স্মিথের ওজন আরও খানিকটা বাড়ে। দোকানে অ্যামির শরীরের মাপের কোনও পোশাক পাওয়া যেত না। সব জামাকাপড় বানিয়ে পরতে হত অ্যামিকে।
রোগা হতে হবে এটা প্রথম অ্যামির মাথায় আসে, যখন ছেলে স্কুলে যাওয়া শুরু করে। অন্য মায়েরা সকালে উঠে বাচ্চাকে টিফিন তৈরি করে দিতেন। স্কুলগাড়িতে তুলে দিতে যেতেন। কিন্তু অ্যামি তাড়াহুড়ো করে কিছুই করতে পারতেন না। মনে মনে কষ্ট পেতেন। সেই মুহূর্ত থেকে রোগা হবেন বলে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নেন অ্যামি। শুরু হয় তাঁর ওজন কমানোর সফর।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে শুরু করেন ডায়েট। জিমে ভর্তি হন। বাড়ির সব কাজ নিজের হাতেই করেন। প্রায় দু’বছরের পরিশ্রম শেষে অ্যামি সফল হন। এখনকার অ্যামিকে দেখলে চেনা দায়। নিজেকেই নিজে চিনতে পারেন না তিনি। অ্যামি বলেন, ‘‘আমি এই মুহূর্তে জীবনের সবচেয়ে সেরা সময় কাটাচ্ছি। আমি যে কোনও দিন রোগা হতে পারি, তা আমার ভাবনার বাইরে ছিল। মনে হত পরিশ্রম করেও এই বিপুল ওজন কমানো সম্ভব নয়। কিন্তু জিম আর ডায়েট শুরুর পর আমার চিন্তাভাবনা বদলাতে শুরু করে। বুঝতে পারি ওজন কমানো কতটা জরুরি। শুধু শরীর নয়, জীবনেও প্রভাব পড়ে এর। সকলের উদ্দেশে আমার পরামর্শ থাকবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। না হলে এমন অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে, যা সমাধান করা সব সময় সহজ নয়।’’