মরসুমি শাকের দূর থাকবে রোগ-বালাই? ছবি: ফ্রিপিক।
বেলা বাড়লেই গরম। আবার সকাল-রাতে হিমেল পরশ। শীত পড়েনি। তবে শীত আসার আগের এই সময়ে ঠান্ডা-গরমের তারতম্যে জ্বর, সর্দি-কাশির বাড়বাড়ন্ত। মরসুমের বদলের সময়ে রোগবালাই ঠেকাতে পুষ্টিকর খাবার খেতে বলেন চিকিৎসকেরা। যাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই তালিকায় ফল তো রাখতেই হবে, কিন্তু প্রতিদিন মরসুমি শাক রাখাও কি জরুরি?
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এই সময়ে শুধু জ্বর, সর্দি নয়, হাঁপানির সমস্যাও বেড়ে যায়। আবার শীতের দিনে কারও কারও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্ত সমস্যা দূর করার জন্য যে কোনও শাকই উপযোগী। কারণ, এতে থাকে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।’’
শীতের বাজার জুড়ে থাকে পালং, মেথি, সর্ষে শাক। এ ছাড়া বছরভরই কমবেশি পাওয়া যায় লাল নটে, কলমি। গুণপনায় কোনওটি কোনওটির চেয়ে কম যায় না।
মেথি শাক
আয়রন, প্রোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিন থাকে মেথি শাকে। পরোটা, তরকারি, রুটিতে মিশিয়েও খাওয়া যায় শাকটি।
সর্ষে শাক
পঞ্জাব সহ একাধিক রাজ্যে ‘মক্কি দি রোটির’ সঙ্গে সর্ষে শাক জনপ্রিয় একটি খাবার। এতে থাকে ভিটামিন বি, সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন।
পালং শাক
পালংয়ের সঙ্গে মাংস থেকে পনির দিয়ে বিভিন্ন পদ বানিয়ে নেওয়া যায়। এ ছাড়া পালং শাকের চচ্চড়িও বাংলার চেনা পদ। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, কে, আয়রন।
লাল শাক
লাল রঙের নটে শাকটি গরম ভারতের সঙ্গে ভাজা খেতে সুস্বাদু। এই শাকের পুষ্টিগুণও নেহাত কম নয়। এতে থাকে প্রচুর আয়রন। এ ছাড়াও ফোলেন, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন এ, সি-ও মেলে এতে।
কলমি শাক
এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম। এ ছাড়াও রয়েছে সোডিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি৬, ক্যালশিয়াম।
শম্পার কথায়, ব্যালান্স ডায়েটের অত্যাবশ্যক অঙ্গ হল শাক। শুধু মরসুমি নয়, যে কোনও শাকই অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন, খনিজের পাশাপাশি শাকে কমবেশি পরিমাণে থাকে ডায়েটরি ফাইবার। যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজমক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। ভিটামিন, খনিজের গুণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। যে হেতু এতে ফাইবার থাকলেও ক্যালোরির পরিমাণ কম, তাই ওজন কমাতে চাইলে শাক খুব কার্যকরী।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, সারা বছরই পাতে একটু করে যে কোনও রকমের শাক রাখা দরকার। তবে তার পরিমাপ বুঝতে হবে। ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম পরিমাণের কাঁচা শাক রান্না করলে যতটুকু হয়, বয়স্করা ততটাই খেতে পারেন। যে সমস্ত শিশু সব ধরনের খাবার খেতে অভ্যস্ত, তাদেরও শাক দেওয়া দরকার। তবে পরিমাণ হবে আরও কম। প্রাপ্তবয়স্করা এর চেয়ে একটু বেশি পরিমাণে খেতে পারেন।