Shobdo Jobdo 2024

একে চন্দ্র, দুইয়ে পক্ষ, তিনে নেত্র - রয়ের কলমে ‘শব্দ-জব্দ’-এর তিন কাহন

শুধুমাত্র মজাদার বাংলা শব্দের খেলা নিয়ে একটা আস্ত আন্তঃ-স্কুল প্রতিযোগিতা-- এটা এর আগে পশ্চিমবঙ্গে কখনও হয়নি।

Advertisement

রয়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ ১২:৫৪
Share:

শব্দ জব্দ ২০২৩-এর চূড়ান্ত পর্বে প্রতিযোগীদের মনোবল বৃদ্ধি করতে ব্যস্ত সঞ্চালক রয় চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।

একে চন্দ্র, দুইয়ে পক্ষ, তিনে নেত্র। হাজারে-হাজারে ছাত্রী আর ছাত্র, টেনে-টেনে আরো খুলবে আমাদের নেত্র। শব্দের লড়াইয়ে সেরা স্কুলের খোঁজ, 'শব্দ-জব্দ', এবার তৃতীয় বছরে মাথা দিল। পা নয়, মাথা। কারণ শব্দ-জব্দ খেলতে গেলে মাথা দিয়েই লড়তে হয়, শব্দ চিনতে হয়।

Advertisement

শুধুমাত্র মজার মজার বাংলা শব্দের খেলা নিয়ে একটা আস্ত আন্তঃ-স্কুল প্রতিযোগিতা-- এটা এর আগে পশ্চিমবঙ্গে কখনও হয়নি। ২০২২ সালে 'শব্দ-জব্দ'র প্ৰথম বছরে ৬টা জেলার ৯৫টা স্কুল প্রাথমিক পর্বের খেলায় নাম দিয়েছিল। ২০২৩-এ ১০টা জেলার ১৫২টা স্কুল-ভরা ৩০ হাজার ছাত্রছাত্রী মাথা ঘামিয়েছিল শব্দের খেলায়। তৃতীয় বছরে আমরা অন্তত ২৫০টা স্কুল আর ৫০ হাজার খুদে বাঙালিকে জব্দ করার চেষ্টা করব শব্দের খেলায়।

খুদে হোক বা বড়–বাংলা শব্দের বানান নিয়ে কম-বেশি সব বয়সের বাঙালিই নড়বড়ে। বাংলা শব্দের মজার খেলাগুলোর মাধ্যমে আমরা খুদে বয়স থেকেই বাংলা বানানভীতি কাটাতে চাইছি। বলা যায়, ভিত থেকে ভীতি কাটানোর এ এক নতুন উপায়-উপাদান।

Advertisement

'শব্দ-জব্দ' খেলায় খুদে বাঙালিকে প্রশ্ন করছেন সঞ্চালক রয়। নিজস্ব চিত্র।

একদম প্রথমেই যে বলেছিলাম, ছাত্রী আর ছাত্র, টেনে-টেনে খুলবে আমাদের নেত্র–সেটা সত্যিই গত দু'বছরে ঘটেছে। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাংলা শব্দের খেলা বানাতে গিয়ে আমাদের বুঝতে হয়েছে, ওদের ব্যবহারিক বাংলা-শব্দ-জ্ঞান কত গভীর। শুধু সিলেবাসের বই, নাকি তার বাইরের বইও পড়ে ওরা? গল্পের বই পড়ে? কাদের লেখা বই পড়ে? বাংলা গান শোনে? কোন ধরনের গান? কাগজ পড়ে? বাংলা সিনেমা-সিরিয়াল দেখে? বাংলা কমিক্স পড়ে?

এই এত রকমের প্রশ্ন গত দু'বছরে 'শব্দ-জব্দ' খেলা অন্তত ৭০-৮০ হাজার খুদে বাঙালির ১০ শতাংশকে জিজ্ঞেস করেছি। সংখ্যাটা হয়তো কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো যথেষ্ট বড় নয়। কিন্তু এটুকু বুঝেছি, এখনকার খুদে বাঙালিরা পড়ার বইয়ের বাইরে গল্পের বই খুব একটা পড়ে না। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়া ছাত্রছাত্রীদের অর্ধেকের অনেক বেশি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, লীলা মজুমদার বা মহাশ্বেতা দেবীর নাম শোনেনি, তাঁদের লেখা কোনও গল্প বা বইও পড়েনি। বাংলা মাধ্যম স্কুলের ক্ষেত্রেও যে এঁদের নাম জানা, তা নয়। ওরা রবীন্দ্র-নজরুল-শরৎ-বঙ্কিম নামগুলো জানে, কারণ ওঁদের লেখা গল্প ওদের পড়তে হয়। ৯৫ শতাংশ বা তার বেশি খুদে বাঙালি কাগজ পড়ে না। বাংলা গান বলতে রবীন্দ্রসঙ্গীত, সিনেমার গান আর বাংলা ব্যান্ডের গান বোঝে ওরা। বাংলা কমিক্সখোর–খুব, খুউব কম।

পড়ার বইয়ের বাইরের যারা প্রায় অন্য কিছু পড়েই না, তাদের শব্দভাণ্ডার কি 'শব্দ-জব্দ' খেলার পক্ষে যথেষ্ট?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement