History of puzzle

সুকুমারের ছড়ায় মেঘদূতের ইতিহাস

শব্দের জট খুলতে গিয়ে তুখোড় হয় ভাষাজ্ঞান। বাংলা সাহিত্য থেকে বাঙালির দিন-প্রতিদিনের জীবন- সবখানেই শব্দ ধাঁধার উপস্থিতি।

Advertisement

এবিপি ডিজিটাল কনটেন্ট স্টুডিয়ো

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৭:৪৮
Share:

গ্রাফিক: সুমন চৌধুরী

'হাঁ করা মুখ জিভ লক লক ঠোঁটের ওপর দড়ি

Advertisement

ক্যাক করে ভাই কামড়ে দিবে ঠ্যাঙ্গের গোড়া ধরি'

বলুন দেখি কী হবে উত্তর?

Advertisement

সুকুমারী কলমের দুনিয়ায় যাদের অনর্গল যাতায়াত, এক মুহূর্তে তাদের আঙুল চলে যাবে আপনার পাদুকার দিকে। মানে এই হেঁয়ালির সহজ উত্তর ‘জুতো’।

ধাঁধা আর হেঁয়ালিতে সুকুমার রায় আট থেকে আশির প্রিয়। বাঙালির তার চেয়েও বেশি প্রিয় শব্দবাজির খেলা। শব্দ নিয়ে প্রশ্ন আর উত্তরের খেলা হল ধাঁধা। ছড়া, প্রবাদ প্রবচনের প্রশ্নবাণ আর এলেমেলো শব্দকে অর্থপূর্ণ ভাবে সাজাতে পারলে তবেই খুঁজে পাওয়া সঠিক উত্তরের চাবিকাঠি। যে খেলায় নিখাদ মজার সঙ্গে বাড়ে মস্তিষ্কের ধার। শব্দের জট খুলতে গিয়ে তুখোড় হয় ভাষাজ্ঞান। বাংলা সাহিত্য থেকে বাঙালির দিন-প্রতিদিনের জীবন- সবখানেই শব্দ ধাঁধার উপস্থিতি। বৈঠকখানা থেকে বিয়ের আসর কোথায় নেই! শুদ্ধ নাম প্রহেলিকা।

'কালিদাস পণ্ডিত কয় বাল্যকালের কথা

নয় হাজার তেঁতুল গাছে কয় হাজার পাতা'

এক সময়ে বাঙালি বাড়ির অন্দরমহলে প্রচলিত ছিল কালিদাসী ধাঁধা। মেঘদূতের মহাকবি কী ভাবে বাংলা ধাঁধার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিলেন, তার সঠিক আন্দাজ পাওয়া কঠিন। তবে কালিদাস পণ্ডিতের হেঁয়ালির বইয়ের কদর ছিল পাঠকদের কাছে। অঙ্কের মারপ্যাঁচে জব্দ করতে ছিল শুভঙ্করের আর্যা।

'কুড়োবা কুড়োবা কুড়োবা লিজ্জে

কাঠায় কুড়োবা কাঠায় লিজ্জে

কাঠায় কাঠায় ধুল পরিমাণ

বিশ গন্ডা হয় কাঠার প্রমাণ'

পাঠশালার পাঠে অঙ্কের গুরুমশাই শিক্ষার্থীদের সহজ পথে বিঘা-কাঠার হিসাব শেখাতে এমন ছড়ার পন্থা নিতেন। সময় আর ভাষার বিবর্তনের সঙ্গে বদলেছে ধাঁধার গড়নও। তবে টান কমেনি। বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাসে হেঁয়ালির নাড়ির যোগ।

'তিনটি অক্ষরে নাম, বুদ্ধি খরধার

মুড়ো বায়ে গুণে দেখি লক্ষ রূপ তার

শেষ ছাড়ি উচ্চে বাস মাথার উপরে

আদি অন্তে মিলে আহা কত মধু ধরে'

‘বাংলা ভাষার এমন মাধুর্য, যে আসছি বলে স্বচ্ছন্দে চলে যাওয়া যায়’। ছন্দ মাধুর্য এ ভাষার প্রাণ। শব্দ খেলায় মাতৃভাষাকে ভালবাসার পাঠ দিতেই আনন্দবাজার অনলাইনের উদ্যোগে শুরু হয়ে গিয়েছে ‘শব্দ জব্দ’ ২০২৪। রাজ্যের ১২টি জেলার ২০০টিরও বেশি স্কুল সাক্ষী হতে চলেছে শব্দকে জব্দ করার রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে চলবে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ। বাংলার সেরা স্কুলকে বেছে নেওয়া হবে প্রতিযোগিতায়। এ খেলায় শব্দ ধাঁধার সমাধান খোঁজার সঙ্গে মজবুত হবে মাতৃভাষার প্রতি ভালবাসা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement