‘রোমিও V/S জুলিয়েট’ মুক্তি পাচ্ছে শুক্রবার। সেখানে শেক্সপিয়র কোথায়?
অঙ্কুশ: শেক্সপিয়র উধাও (হাসি)! ফিল্মে রোমি হয়ে যায় রোমিও। আর জুলি হয়ে যায় জুলিয়েট। যাদের নাম রোমিও আর জুলিয়েট হতে পারে, তাদের জার্নিটা নিয়েই ছবি।
এটা কী রকম হল?
অঙ্কুশ: ছবিতে আমার চরিত্রটা খুব দুষ্টু। গ্রামপ্রধানের সঙ্গে একটা র্যাপো তৈরি করি আমি। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় যখন প্রধানের মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায়। সেখান থেকে বেরনোর জন্য আমি বলি যে আমি লন্ডনের এক মেয়েকে ভালবাসি। সবাই বলল এক সপ্তাহের মধ্যে ওই মেয়েটিকে গ্রামে নিয়ে আসতে হবে এবং ওকে বিয়ে করতে হবে। তা যদি না হয় তা হলে আমাকে বিয়ে করতে হবে প্রধানের মেয়েকেই। লন্ডন থেকে মেয়েটিকে নিয়ে আসার গল্পটা নিয়েই ফিল্মের প্লট। লন্ডনের জার্নিটা হিলেরিয়াস। সেখানে একটা টুইস্ট রয়েছে। বাকিটা আর বলব না। ছবির গল্প জাস্টিফাই করে কেন ফিল্মের নাম ‘রোমিও V/S জুলিয়েট’।
আর শেক্সপিয়র?
রিনাদি (অপর্ণা সেন) জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তোমার ছবিটা ‘রোমিও V/S জুলিয়েট’। এটা কি অরিজিনাল রোমিও-জুলিয়েটের গল্প?’ পাশে কৌশিকদা (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়) ছিলেন। বললেন, ‘ভালমানুষকে জিজ্ঞেস করেছে।’ আমি বলি, ‘না, শেক্সপিয়র নেই। আদ্যোপান্ত একটা রোম্যান্টিক কমেডি’।
মাহি, শ্যুটিং করার সময় মনে হয়নি যে শেক্সপিয়র উধাও ছবি থেকে?
মাহি: আমি কাহিনিটা জানতাম। আসল বিষয়টা ছিল টিমটার সঙ্গে কাজ করা। অঙ্কুশদা খুব মজা করে।
সারাক্ষণ তারকারা বলেন সেটে তাঁরা না কি খুব মজা করে থাকেন। একটু বলবেন এই মজাটা আসলে কী?
অঙ্কুশ: (হাসি) আজ পর্যন্ত এই মজাটা জানা গেল না।
মাহি: অঙ্কুশদার সঙ্গে কমেডি দৃশ্য করলে অটোমেটিক্যালি হাসি পায়!
অঙ্কুশ: আর জোর জবরদস্তি চুমুটা বলো! (হাসি)
অঙ্কুশ, আপনার তো অনস্ক্রিন চুমুতে অ্যালার্জি আছে...
অঙ্কুশ: অ্যালার্জি নেই। জায়গা বুঝে ‘না’ রয়েছে। অনস্ক্রিন, অফস্ক্রিন, সব সময় ও জায়গা বুঝেই করেছে। (হাসি)
দাঁড়ান। এই যে বললেন কথাটা, এটা কিন্তু রেকর্ড করা হচ্ছে। ভেবেচিন্তে, প্রশ্নের কনটেক্সটটা বুঝে বলছেন তো?
অঙ্কুশ: (হাসি) একদম।
মাহি: আরে ও এমন ভাবে কিস করেছে যে আমার দুই গাল ছিঁড়েই গিয়েছিল।
অঙ্কুশ: অনস্ক্রিন (হাসি)। আসলে আমার দাড়িটা খুব কড়া। ‘বেখেয়ালি মন’ গানটার সময় গালে গাল ঘষার পর ওর মুখে সে কী লাল র্যাশ!
মাহি: র্যাশ না। একদম দাড়ি গালের মধ্যে ঢুকে-টুকে গিয়েছিল।
এত দিন পর্যন্ত ‘লাভ বাইটস’ শুনেছিলাম। এই প্রথম...
অঙ্কুশ: হ্যাঁ, বিয়ার্ড বাইটস। এর আগে আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে অনেক দিনের বন্ধুত্ব। জানি ওরা কে কীসে রিঅ্যাক্ট করবে। কিন্তু মাহির ক্ষেত্রে আমার ফ্লোর-এ ফ্রেন্ডশিপ।
এখন যা বন্ধুত্ব হয়েছে তাতে কোলে নিয়ে গিয়ে ফোটোশ্যুট করলেন...
অঙ্কুশ: (হাসি) আমি তো সুযোগের সদ্ব্যবহার করলাম যাতে ছবি তোলার অভিজ্ঞতার রেশটা না কাটে...
আচ্ছা, মাহির সঙ্গে চুমু ইত্যাদির গল্পে ঐন্দ্রিলা কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করেন?
অঙ্কুশ: এতে আমার কাজিনরা তো রাগ করে না (হাহাহাহা)।
কাজিন! ঐন্দ্রিলাকে ফোন করি?
অঙ্কুশ: (হাহাহাহা) শ্যুট করতে করতে আমি ওকে বললাম গালে একটা কিস করো। ভেবেছিলাম লাইটলি করবে। কিন্তু ও যে কষে চুমুটা খেলো... বুঝলাম ওর ব্যথা আছে!
মাহি: ব্যথা আছে মানে কী?
অঙ্কুশ: মাহির এই সরলতাই আমার দারুণ লাগে... (হাসি) বাই দ্য ওয়ে, আমার ট্রিমার দিয়ে দাড়ি কাটতে গেলে কেটে যায়। আর আমার সব নায়িকাই বলে ওটা লাভ-বাইট। বোঝাতেই পারি না ওটা ট্রিমারে কাটার দাগ।
বলছেন সবাই ভুল দেখে?
অঙ্কুশ: হয় ভুল দেখা। নইলে ওরা সবাই লাভ-বাইট নিয়ে পিএইচ ডি করেছে...
মাহি, এই যে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় এসে ছবি করলেন, এর পর কী করবেন?
মাহি: এসকে মুভিজ-এর সঙ্গে আরও একটা ছবি করছি।
শুধুমাত্র এই ব্যানারেই ছবি করবেন?
মাহি: যেহেতু এই ব্যানার আমাকে ব্রেক দিয়েছে, তাই ওদের অফারকেই প্রায়োরিটি দেব।
অঙ্কুশ, অনেক দিন একটা ব্যানারের সঙ্গে কাজ হয়ে গেল। এর পর কী?
অঙ্কুশ: একটা সময় আমি ১০ লক্ষ টাকা চোখেই দেখিনি। তখন কেউ ১০ লক্ষ অফার করলে আমি ভেসেই যেতে পারতাম। সেটা হয়নি কারণ ধানুকাজিরা আমার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আজ আমি কলকাতার দু’টো নামকরা ব্যানারে ছবি করতে চাই। বছরে অনেক বেশি সংখ্যক ছবি করতে চাই।
ইমরান হাসমি একটা সময় শুধু ভট্ট ক্যাম্পেই ছবি করতেন। তার পর একতা কপূরের সঙ্গে ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ করলেন। বা ধরুন টলিউডে দেব যেটা করেছিলেন...
অঙ্কুশ: আমিও সেটাই করতে চাই। আমি জানি এই সময় আমাকে কেউ চাইলেও খারাপ অফার দিতে পারে না।
কেন? ইন্ডাস্ট্রির তো সেই দায় নেই...
অঙ্কুশ: আমার ক্ষতি চাইতে গিয়ে ছবির ক্ষতি তো কেউ চাইবে না। আমার ছবিগুলো দেখলে বোঝা যাবে ‘ইডিয়ট’ নতুন আঙ্গিকের ছবি। যদিও তেমন ব্যবসা করেনি। ‘কানামাছি’ও তেমন ব্যবসা করেনি। কিন্তু সমালোচকদের ভাল লেগেছিল। ব্যবসার দিক থেকে সবচেয়ে ভাল করেছে ‘খিলাড়ি’। তার পরেই ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়।’
ইন্ডাস্ট্রিতে আনুগত্যের মর্যাদা আছে?
অঙ্কুশ: বলুন তো, কেউ কি এখানে ৫০ বছরের এক্সক্লুসিভ কনট্র্যাক্ট করে কারও সঙ্গে? করে না তো। মানুষ এখানে ব্যবসা করে। ভালবাসাও থাকে। আমি ফ্লপ হিরো হলে কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। আজ যে আমি দুই থেকে পাঁচ হয়েছি, তা হলে পাঁচের ভ্যালুটা সবাই ব্যবহার করতে পারবে।
বলছেন যে আপনি চূড়ান্ত পেশাদার?
অঙ্কুশ: একদম। আজ যদি আমি তিন কোটি চেয়ে বসি, সেটা হবে না। তারা ততটাই দেবে যতটা উপযুক্ত।
‘মিডল অব দ্য পাথ’ সিনেমাতেও কি আপনার আগ্রহ রয়েছে?
অঙ্কুশ: আমি এমন ছবি করতে চাই যেটা আমাকে এগিয়ে দেবে। কিন্তু আমার ঝোঁক বাণিজ্যিক ছবির দিকে। আমাদের প্রচুর অনুষ্ঠান করতে হয়। ওই জগৎটা বেঁচে আছে কমার্শিয়াল ছবির জন্য। কিন্তু ওরা ‘কানামাছি’র নাম শোনেনি। ‘কী দিয়া বানাইছে তোরে ভগবান’ এই সব ওদের পছন্দ। আমাকেও তো বিএমডব্লু চড়তে হবে। যেহেতু আমাদের কাছে ব্যাঙ্কক, নিউ ইয়র্ক বলতে মেমারি, বোলপুরের জগৎটাই আছে, তাই মূলধারার ছবির দিকে আমার আগ্রহ বেশি।
ঐন্দ্রিলার সঙ্গে ছবি?
অঙ্কুশ: কোনও প্রজেক্টের জন্য আমি ওর কথা বলতে পারি। কিন্তু ও চায় না।
লন্ডনে থাকাকালীন তো আপনার হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস ছিল ‘আই উইল মিস ইউ, মাই কিউটি ডল!!’...
মাহি: অঙ্কুশদা সারা দিন ফোনেই ছিলেন। ওর ফোনের এমন আওয়াজ যে মেক আপ ভ্যানের উল্টো দিকে বসেও শুনতে পেতাম। তখন অঙ্কুশদাকে বলতাম ‘আমি সব শুনতে পাচ্ছি!’
অঙ্কুশ, আপনিও কি উল্টোটা শুনেছেন?
অঙ্কুশ: ফিসফিসে গলায় মাহিকে শুনতাম বলতে: ‘না’... ‘এখন না’। বুঝতে পারতাম ও কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজকে ‘না’ বলছে! (হাসি)
মাহি: উফ্ফ। তোমাকে নিয়ে পারব না।