এক মেসবাড়ির গল্পই ফিরতে চলেছে জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস্-এর ফিল্ম ‘শেষ মেস’-এর হাত ধরে। নিজস্ব চিত্র।
উনিশ শতকের সদ্য আলোকপ্রাপ্তএবং এই শহরে বহিরাগত চাকুরে বা শিক্ষার্থী বাঙালির একমাত্র আশ্রয় ছিল মেসবাড়ি। বাঙালি সাহিত্যিকদের অনেকেই ছিলেন মেসবাড়ির বাসিন্দা। তার প্রতিফলন ঘটেছে গল্প-উপন্যাসেও (ঘনাদা)।বাংলা সিনেমাতেও মেসবাড়ির কমতি নেই (‘সাড়ে চুয়াত্তর’, ‘বসন্ত বিলাপ’)। সেরকম এক মেসবাড়ির গল্পই ফিরতে চলেছে জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস্-এর ফিল্ম ‘শেষ মেস’-এর হাত ধরে।কেমন সেই গল্প?
ফিল্মের দুই পরিচালকের একজন আদিত্য সেনগুপ্ত উত্তর দিলেন, “শহরের শেষতম মেসবাড়ির বাসিন্দাদের নিয়েই গল্প। গল্পটা কমেডি ড্রামা। তার মধ্যে প্যারা নরম্যাল টাচ আছে। তবে ঠিক ভূত নয়। বাড়িটা ইটসেলফ একটা চরিত্র।”
গল্পের মেসবাড়ির অন্যতম বাসিন্দা গৌরব চক্রবর্তীর কথায়: “গল্পের মূল বিষয়টা হল, মেসবাড়ির মালকিনের মৃত্যুর পর সমস্ত বাসিন্দা বাড়িটা দখল করতে চাওয়া বাইরের এলিমেন্টদের দূর করার চেষ্টা করে এবং শেষমেশ করতে পারে কিনা।”
আরও পড়ুন-বচ্চন পরিবারে নতুন অতিথি! ফের মা হচ্ছেন ঐশ্বর্য?
অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়ের চরিত্র প্রবীর মেসবাড়ির সবথেকে প্রবীণ বাসিন্দা। যোগ করলেন, “এই মেসবাড়িতে যে মানুষগুলো থাকে তাদের ভ্যালুজগুলো কখনও নষ্ট হয় না। এই ভ্যালুজ বা বাঙালিয়ানা আছে ছবিটার মধ্যে। ছবিটার মানবিক মূল্যবোধের জায়গাটা খুব ভাল লেগেছে।”
কাজ করতে ভয় করেনি? অন্যতম পরিচালক খেয়া চট্টোপাধ্যায় বললেন, “ভয় তো ছিলই। কারণ অনসম্বল কাস্ট।”
পরিচালক, ক্যামেরাপার্সন দেবাংশু সেনগুপ্ত এবং অভিনেতা খেয়ালি দস্তিদারের ছেলে আদিত্যকে দর্শক দেখেছেন ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ফিল্মের নায়ক হিসেবে। নিজের ফিল্মে অভিনয় করলেন তিনি?
বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায় এবং অপরাজিতা ঘোষ দাস এই ফিল্মে দুই বোন
খেয়া জানালেন, “আমি আর আদিত্য ভাইবোনের রোল করেছি যারা হল ভিলেন।”
ইতালিয়ান ফিল্ম ‘ফানটাস্মা আ রোমা’ (রোমের ভুত) বা ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এও পুরনো বাড়ি বাঁচানোর গল্পই দেখি। খেয়া জানালেন, “এই ফিল্মটা একদমই আলাদা। গল্পটা মোর অ্যাবাউট আ ফ্যামিলি।তবে হ্যাঁ, তিনটে ফিল্মেই জীবিত বা মৃত ব্যক্তিরা পুরনো বাড়ি বাঁচানোর চেষ্টা করছে।”
পিসতুতো ভাইয়ের ফিল্ম বলে অভিনয় করতে রাজি হলেন? গৌরব বললেন, “আমি জানি, ওর মধ্যে কতটা ট্যালেন্ট আছে। ছোটবেলায় আমরা একসঙ্গে পড়েছি। তখন থেকেই ফিল্ম নিয়ে আমাদের অনেক আলোচনা। ও কী ধরনের কাজ করতে পারে সেটা আমি দেখেছি। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি এখনও দেখেনি। সে কারণে আমি খুব এক্সাইটেড। আমি যদি ছবিতে না-ও থাকতাম তাও এই ডিরেক্টর ডুও-র জন্য ইকুয়ালি এক্সাইটেড হতাম।”
বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায় এবং অপরাজিতা ঘোষ দাস এই ফিল্মে দুই বোন (রেখা ও লতা)। মেসবাড়ির বাসিন্দা।এই ফিল্মে ছেলেমেয়েরা মেসবাড়িতে থাকে একসঙ্গেই। উত্তর আধুনিক ভাবনায় ও ব্যবহারিক ক্ষেত্রেবিরল না হলেও বিষয়টি আমাদের সমাজে এখনও তেমন প্রচলিত নয়। এই ফিল্ম তাই লিঙ্গ সমতার দিকটিও এড়িয়ে যায় না।
অপরাজিতা তাই বলেন, “আমরা জানি যে মেসে জেনারেলি ছেলেরাই থাকে। কিন্তু এটা এমন একটা মেস যেখানে দু’জন মেয়েও থাকে। তারাও কিন্তু নিজেদের অধিকার নিয়ে বলে, সমানভাবে আনন্দও করে আর ভীষণ স্বাবলম্বী।”
অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়ের চরিত্র প্রবীর মেসবাড়ির সবথেকে প্রবীণ বাসিন্দা
ফিল্মের লতা বাসবদত্তা যোগ করেন, “লতা শান্তশিষ্ট এক মেয়ে। নিজে কথা বলে না। দিদি রেখা যা বলে তাতে সায় দিয়ে যায়। কিন্তু সেরকম কোনও পরিস্থিতিতে পড়লে সে-ও কথা বলে।”
মেসবাড়ির মালকিন খেয়ালি দস্তিদারের চরিত্র কেমন? তিনি বললেন, “বুসকা (আদিত্য) বলল, ‘তোমার একটা রোল আছে মা। খুব সুন্দর। থ্রু আউট তুমি আছ।’ পরে ইতি গজ-র মতো বলল, ‘তোমাকে দেখা যাবে না।’ হা হা... আমি বললাম, সেকি রে! এটা কীরকম রোল? ও বলল, ‘সেটাই তো মজা। এরকম একটা চান্স পাচ্ছ। খুব ভাল একটা রোল।’ আমি বললাম, আমি ছাড়া আর কেউ এই চরিত্র করবেও না। হা হা হা...”
এছাড়াও অভিনয় করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রাজদীপ প্রমুখ। ফিল্মটি দেখা যাবে কাল, রবিবার দুপুর ১টায়।
আরও পড়ুন-‘সেক্স রিহ্যাবে যান’, #মিটু বিতর্কে আবারও অনু মালিককে এক হাত দিলেন সোনা