গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় শিরোনাম একটাই। গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-র আচমকা অকালমৃত্যু। প্রশ্ন উঠছে, কেকে-র শেষ অনুষ্ঠান যেখানে, সেই নজরুল মঞ্চে ঠিক কী ঘটেছিল? ইতিমধ্যেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম কার্যত স্বীকার করেছেন, প্রেক্ষাগৃহের আয়তনের তুলনায় ভিড় বেশি ছিল। তিনি এমনও ইঙ্গিত দেন যে, অতিরিক্ত ভি়ড় থাকায় ‘পরিস্থিতি বিগড়ে’ গিয়ে থাকতে পারে।
যে কোনও শিল্পীকেই মঞ্চ, দর্শকের উচ্ছ্বাস এক অন্য রকম অনুপ্রেরণা যোগায়। কেকের ক্ষেত্রে সেই উচ্ছ্বাস, সেই মঞ্চই কি কাল হয়ে দাঁড়াল? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাওয়ার মাঝেই নিজের শুরুর সময়কার অভিজ্ঞতার কথা নেটমাধ্যমে ভাগ করে নিলেন শিলাজিৎ। ফিরে গেলেন নিজের শুরুর দিনগুলোতে।
পুরুলিয়ার একটি শোয়ের কথা লিখেছেন শিলাজিৎ। সেখানে না ছিল কোনও অডিটোরিয়াম, না ছিল কোনও গ্রিনরুম। শোয়ের শেষে যে ঘরে পঞ্চাশ জন লোক থাকলেও মনে হতে পারে অতিরিক্ত ভিড়, সেই ঘরেই দুশো ছেলেমেয়ের ভিড়। কেকে-র মৃত্যুতে বারবার সেই স্মৃতিগুলোই ভিড় করে আসছে গায়কের। পোস্টে তিনি লিখেছেন এমন আরও এক শোয়ের কথা— ‘জঙ্গিপুর, দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা, হাজার হাজার মানুষ, ব্যারিকেড ভেঙে গিয়েছে। একটু আগে প্রণববাবু তাঁর জ়েড ক্যাটাগরি সুরক্ষা নিয়ে চলে গিয়েছেন। অর্গানাইজার কারা বুঝতেই পারছি না। সবাই দর্শক।’
শিলাজিতের মতে, দর্শকের এই ভালবাসা, এই আদরই যে কখন অত্যাচার হয়ে দাঁড়ায়, সে কথা যেন টের পেয়েও পান না শিল্পীরা। কেকে-র এমন অকালপ্রয়াণ তাই কিছুটা হলেও আতঙ্কে রেখেছে তাঁকে। গায়ক লিখেছেন, ‘এখন আমি খালি ভাবছি কেকে-র শেষ অনুষ্ঠানের কিছু মুহূর্তের কথা। যদি কোনও ভাবে এ রকম অবস্থায় আমি বা রূপম পড়তাম, তা হলে বোধ হয় মঞ্চেই লাশ হয়ে যেতাম। মঞ্চে উঠলে শ্রোতা-দর্শকের উত্তেজনা দেখে যা শক্তি খরচ করে ফেলি আমরা! যে ভাবে আমাদের শরীরটাও গান গায়, তাতে বোধহয় হাসপাতালে পৌঁছনো হত না।”