জন্মদিনে আমির কী ভাবছেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
সাফল্য এবং ব্যর্থতার মিশেলেই জীবন। পঁয়ত্রিশ বছরের কেরিয়ারে এই দুই মেরুতেই বিরাজ করেছেন আমির খান। আর এই মুহূর্তে তাঁর কেরিয়ার খুব একটা ভাল অবস্থায় নেই। গত বছর মুক্তি পেয়েছিল আমিরের প্রতিক্ষীত ছবি ‘লাল সিংহ চড্ডা’। কিন্তু বক্স অফিসে এই ছবির ভরাডুবির পর আমির অভিনয় থেকে হঠাৎই বিরতি ঘোষণা করেছেন। তাই ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’-এর ব্র্যান্ড ভ্যালু থেকে শুরু করে কেরিয়ার নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে।
সাম্প্রতিক অতীতে আমির অভিনীত দুটি ছবি দর্শকরা কার্যত ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। প্রথমটি ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঠগ্স অফ হিন্দোস্তান’ এবং দ্বিতীয়টি ‘লাল...’। এমনিতেই কিছুটা সময় নিয়ে ছবি করার পক্ষপাতী আমির। সেখানে শেষ ছবি ফ্লপ করার পর শোনা যায়, তিনি নাকি ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছেন। মনের দিক থেকেও ভেঙে পড়েছেন। কারণ ‘পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই’— আমির বরাবরই এই নীতিতে বিশ্বাসী। তার পরেও সাফল্য রয়ে গিয়েছে অধরা।
‘লগান’ এবং ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবি দুটোর হাত ধরে কেরিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিলেন আমির। তাঁর থেকেই তো ‘থ্রি ইডিয়টস্’, ‘পিকে’ কিংবা ‘দঙ্গল’-এর মতো ব্লকবাস্টার উপহার পেয়েছে বলিউড। কিন্তু বলা হচ্ছে আমির নাকি আত্মবীক্ষণে মন দিয়েছেন। গত বছর নভেম্বরে আচমকাই এক অনুষ্ঠানে তিনি অভিনয় থেকে সাময়িক বিরতি ঘোষণা করেন। তত দিনে কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছিল, আমির নাকি স্প্যানিশ ছবি ‘চ্যাম্পিয়নস’ ছবিটির হিন্দি রিমেকে অভিনয় করতে পারেন। কিন্তু ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, তিনি নিজেকে এই ছবি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। অবসর ঘোষণার সময় আমির জানিয়েছিলেন আগামী কয়েক বছর তিনি পরিবারকে সময় দিতে চান। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী এক দেড় বছর আমি অভিনয় নয়, প্রযোজক হিসেবে কাজ করব। অভিনয় করেত গিয়ে নিজের জীবনে কী হচ্ছে তার খোঁজ রাখিনি। ৩৫ বছর কাজ করেছি। এ বার একটু পরিবারকে সময় দিতে চাই।’’
আমিরের মতো সুপারস্টারের কেরিয়ার নিয়ে এত দ্রুত সিদ্ধান্তে আসা অনুচিত বলেই মনে করছেন বলিউডের প্রথম সারির সিনেমা ব্যবসা বিশেষজ্ঞ তরণ আদর্শ। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘প্রথম সারির একজন অভিনেতা কাজ বন্ধ করলে শূন্যতা তৈরি হয়। বুঝতে হবে নিশ্চই কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। ব্যর্থতা তো জীবনেরই অংশ। আমার মতে। যে অভিনেতারা এতগুলো বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিকে এত কিছু দিয়েছেন তাঁদের ছোট করে দেখা উচিত নয়।’’
আমিরের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় দিন গুনছেন তাঁর অনুরাগীরা। ছবি: সংগৃহীত।
ভুলে গেলে চলবে না, এর আগে স্ত্রী কিরণ রাওয়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘোষণা করেছেন আমির। তার পরেও পরিবারের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কারণ কঠিন সময়ে মানুষ তো তাঁর পরিবারের কাছেই ফিরে আসে। পাশে রয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির কাছের মানুষরাও। সমাজমাধ্যমে অভিনেতার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থার তরফেও দেওয়া হয়েছে একটি সুন্দর বার্তা। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘ভুবন থেকে প্রত্যেকের কাছে লাল হয়ে ওঠা মানুষটাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। প্রার্থনা করি যাতে আপনার হাসি এবং ভালবাসা ছড়িয়ে দেওয়া বন্ধ না হয়।’’
পর পর ছবি ব্যর্থ হওয়ার পরেও ‘পাঠান’-এর হাত ধরে কাঙ্ক্ষিত কামব্যাক করেছেন শাহরুখ খান। কেরিয়ারে ঠিক একই ভাবে ‘ওয়ান্টেড’ ছবির হাত ধরে ফিরে এসেছিলেন সলমন খান। আমির কি পারবেন? কতটা সময় লাগবে তাঁর? জন্মদিনে তিনি নিশ্চয়ই আগামীর ছক কষছেন। ক্ষুরধার বুদ্ধিতে মেলাচ্ছেন যাবতীয় অঙ্ক। ফলাফলের আশায় বুক বেঁধেছেন তাঁর অগণিত অনুরাগী।