সন্ন্যাস নেওয়ার পর প্রাক্তন অভিনেত্রী মমতা কুলকর্নির নাম হয়েছে ‘মাই মমতা নন্দগিরি’। ছবি: সংগৃহীত।
কোনও দিনই অভিনেত্রী হওয়ার বাসনা ছিল না তাঁর। তবু, এসে পড়েছিলেন বলিউডে। শুধু যে অভিনয় করেছিলেন, তা-ই নয়। বরং নব্বইয়ের দশকে তাঁর লাস্যময় উপস্থিতি দর্শককে আপ্লুতও করেছিল। কিন্তু কোনও দিনই প্রথম সারির নায়িকা হয়ে উঠতে পারেননি মমতা কুলকার্নি। এক সময় দেশ ছেড়েই চলে যান। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে মাদকচক্রে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ।
সম্প্রতি দেশে ফিরে একেবার সান্ন্যাসী হয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন অভিনেত্রী। শুক্রবার তিনি প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলায় গিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করেছেন, এ কথা বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে খোদ উত্তরপ্রদেশ সরকার। জানা গিয়েছে, নিজের পূর্বাশ্রমের যাবতীয় স্মৃতি বিসর্জন দিয়ে পিণ্ডদানও করে ফেলেছেন তিনি। কিন্নর আখারার অধীনে ‘মাই মমতা নন্দগিরি’ নাম গ্রহণ করেছেন। আখারার তরফ থেকে তাঁর ‘পট্টাভিষেক’ হয়েছে।
মহাকুম্ভের মেলা প্রতি বারো বছর অন্তর বসে ভারতের চারটি স্থানে— হরিদ্বার, নাসিক, উজ্জয়িনী এবং প্রয়াগরাজে (পূর্বতন এলাহাবাদ)। এর আগের ২০১৩ সালে প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় এসেছিলেন মমতা। তার আগের বছর গঙ্গাস্নান সেরেছিলেন হরিদ্বারে, জানিয়েছিলেন নিজেই।
বছর নয়েক আগে সংবাদমাধ্যমে প্রশ্নের উত্তরে মমতা জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্র জগতকে বিদায় জানিয়ে তিনি বিন্দুমাত্র কষ্ট পাননি। কারণ তিনি কখনওই অভিনেত্রী হতে চাননি। মমতা বলেন, “আমার মায়ের প্রভাবে এবং চাপেই আমি অভিনয় জগতে পা রেখেছিলাম। অভিনয়কে পেশা করেছিলাম। আমি কখনওই ইচ্ছুক ছিলাম না। ফলে এই দুনিয়াকে বিদায় জানাতে আমার কষ্ট হয়নি।”
গত কয়েক বছরে মমতা আধ্যাত্মিকতার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। ২০১৬ সালেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ২ হাজার কোটি টাকার মাদক পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে মমতা জানিয়েছিলেন, তিনি যোগিনী। সে বছর কেনিয়ার মোম্বাসা থেকে এক ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে মমতা দাবি করেছিলেন, তিনি ২০ বছর ধরে ধর্মীয় কাজের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি মহারাষ্ট্র পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজুকে। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘আমি কখনও ভারতীয় আইন অবমাননা করিনি। এমন কিছু করিনি যা দেশের লজ্জার কারণ হয়। আমাকে মার্কিন ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও ঠাণে পুলিশের যড়যন্ত্রের শিকার হতে হচ্ছে।’’