অভিনয় ছেড়ে আধ্যাত্মিক জীবনে জনি
কৌতুকশিল্পীরা প্রতিনিয়ত হাসান। কথার তোড়ে, হাসির মোড়কে চাপা পড়ে যায় তাঁদের ব্যক্তিজীবনের কাহিনি। চাপা পড়ে যায় ব্যক্তিগত বেদনাবোধ। যেমনটা হয়েছিল বলিউডের আইকনিক কমেডিয়ান জনি লিভারের বেলাতেও। ৩০০-রও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন। যদিও অভিনয় কিংবা লোক হাসানো জনির জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল না।
ধর্মই তাঁকে দিয়েছিল শান্তির আশ্রয়। সাল ২০১১-১৩, নতুন পথের সন্ধান পেয়েছিলেন কৌতুকশিল্পী। সেই পথের সম্পর্কে বলতেও চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, সবই ঈশ্বরের দান। তাঁর ঈশ্বর যেমন করে তাঁর মরণাপন্ন ছেলেটিকে বাঁচিয়েছিলেন। কেবল প্রার্থনাটুকু করতে যেন কেউ কসুর না করেন!
২০১১-র অক্টোবর মাসে আর বি ক্লিফোর্ড মেমোরিয়াল কনভেনশন সেন্টারে একটি বক্তৃতায় সকলের হৃদয় নাড়িয়ে দেন জনি। তাঁর তখন বক্তৃতা দেওয়ার নেশা চেপেছে। সেখানেও ধর্মোপদেশ দিয়েছিলেন একঘর শ্রোতার সামনে। ঈশ্বরের মাহাত্ম্য এবং প্রার্থনার শক্তি সম্পর্কে কথা বলেছিলেন তিনি। কী ভাবে ঈশ্বর তাঁর ক্যানসার আক্রান্ত ছেলে জেসিকে বাঁচিয়েছিলেন, সে কথা তিনি খুলে বলেন। জনির কথায়,‘‘চিকিৎসকরা আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। অস্ত্রোপচার করাও ঝুঁকির ছিল। ছেলেকে বাঁচিয়েছিলেন ঈশ্বর।’’
এর পরই কৌতুকশিল্পী থেকে ধীরে ধীরে ধর্মপ্রচারক হয়ে গেলেন জনি। তাঁর এই রূপান্তর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, জনি বলেছিলেন, ‘‘ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল এমনই৷ আমি সব সময়ই ধর্মবিশ্বাসী ছিলাম, কিন্তু একটি ঘটনা আমার জীবন বদলে দিয়েছে। আমার ছেলের ক্যানসার। আমি অসহায় ছিলাম এবং সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের কাছে শরণ নিয়েছি। আমি চলচ্চিত্রে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সমস্ত সময় ছেলের জীবনের জন্য প্রার্থনা করে কাটিয়েছি। দশ দিন পরে, যখন তাকে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, চিকিৎসকরা অবাক হয়েছিলেন কারণ ক্যানসার অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। এ ঘটনা আমার জন্য একটি নতুন জীবনের সূচনাস্বরূপ ছিল।”
‘বাইবেল’ এবং ধর্মোপদেশের প্রতি তাঁর ভালবাসা নতুন করে গড়ে ওঠে। জনি বলেছিলেন, “আমি রোমান ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি, কিন্তু বাইবেল পড়ার চেষ্টা করিনি। এখন, আমি নিশ্চিত যে, আমি এটা ঠিক ভাবে পড়তে পেরেছি। এক জন আদর্শবান মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছি।’’
জনির বিশ্বাস, প্রার্থনা সৎ হলে ঈশ্বর সাড়া দেন। অলৌকিক কাণ্ড? হয় বৈকি!