ইন্ডাস্ট্রিতে এমনিতে সরল সাদাসিধে বলেই পরিচিত ধর্মেন্দ্র। কিন্তু কেউ তাঁর স্বার্থে ঘা দিলে তিনি যে ছেড়ে কথা বলেন না, তা জানে বলিউড। এ কথা এক বার ভালই টের পেয়েছিলেন করিশ্মা কপূর ও তাঁর মা ববিতা।
ধর্মেন্দ্রর ছোট ছেলে ববি দেওলের প্রথম হিন্দি ছবি ‘বরসাত’। এই ছবির নাম প্রথমে ভাবা হয়েছিল ‘বাদল’। পরে নাম পাল্টানো হয়। ১৯৯০ সালে ছবিতে ববির বিপরীতে অভিনয় করার কথা ছিল করিশ্মা কপূরের।
নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় শেখর কপূরের পরিচালনায় ‘বরসাত’ ছবি দিয়েই বলিউডে ববি দেওল ও করিশ্মা কপূর, দুই স্টারকিডের হাতেখড়ি হওয়ার কথা ছিল। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পত্রিকার প্রচ্ছদে দু’জনে ফোটেশুটও করেছিলেন। যা ছিল, এই ছবির প্রোমোশন।
২০ দিন মতো শুটিং হয়ে যাওয়ার পরে ‘বরসাত’ ছবি থেকে সরে দাঁড়ালেন পরিচালক শেখর কপূর। তাঁর ছবিটি করতে ভাল লাগছিল না। ফলে ছবিটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। মেয়ের প্রথম ছবির কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ববিতা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন।
ববিতা চেয়েছিলেন, দ্রুত করিশ্মা পা রাখুন ইন্ডাস্ট্রিতে। সে সময় পহেলাজ নিহালনি একটি ছবিতে বিবেক মুশরান এবং করিশ্মা কপূরকে কাস্ট করেছিলেন। ছবির নাম ছিল ‘ফার্স্ট লভ লেটার’।
ববিতা চেয়েছিলেন, যে করেই হোক সে বছরই করিশ্মা অভিনয় শুরু করুক। তাই ধর্মেন্দ্রকে অন্ধকারে রেখেই এই ছবিতে সই করান করিশ্মাকে। এ কথা শুনেই ধর্মেন্দ্র রেগে যান। শোনা যায়, তিনি পহেলাজকে ফোন করে বলেন তাঁর ছবি থেকে করিশ্মাকে বাদ দিতে। কারণ তিনি চাননি ববির আগে করিশ্মার আলাদা ভাবে বলি ডেবিউ হোক।
ধর্মেন্দ্রর কথা ফেলতে পারেননি পহেলাজ। সই করার পরেও তিনি নিজের ছবি থেকে বাদ দেন করিশ্মাকে। পরিবর্তে সুযোগ পান মনীষা কৈরালা।
এই অবস্থায় করিশ্মার কাছ থেকে দু’টো সুযোগই চলে যায়। ‘বরসাত’ ছবির কাজ অর্ধসমাপ্ত হয়ে থাকল। অন্য দিকে ‘ফার্স্ট লভ লেটার’ থেকেও খারিজ হলেন তিনি।
‘বরসাত’ ছবিটি অবশেষে বহু পরিবর্তনের ধাপ পেরিয়ে মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৫ সালে। রাজেশ খন্না সহ প্রযোজক হন এ ছবির। ববির বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় দেখা যায় টুইঙ্কল খন্নাকে।
কিন্তু ববির মতো আত্মপ্রকাশের জন্য পাঁচ বছর ধৈর্য ধরতে রাজি ছিলেন না করিশ্মা। তিনি ১৯৯১-তেই বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন। প্রথম ছবি ছিল ‘প্রেম কয়েদি’। করিশ্মার বিপরীতে নায়ক ছিলেন নবাগত হরিশ কুমার। বক্স অফিসে মাঝারি হিট হয়েছিল ‘প্রেম কয়েদি’।
কপূর পরিবারের রক্ষণশীল ধারার বিরুদ্ধে গিয়ে দুই মেয়েকে নায়িকা করেছিলেন ববিতা। পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা পেতে যথেষ্ট স্ট্রাগল করেত হয়েছে করিশ্মাকেও।
অন্য দিকে ববি দেওলও তাঁর বাবা বা দাদার মতো সুপারস্টার হতে পারেননি। তবে ছেলের কথা ভেবে ধর্মেন্দ্রও চেষ্টার কসুর করেননি। নিজের প্রভাব বিস্তার করে তিনি কপূর পরিবারের সঙ্গে টক্কর দিতে পিছপা হননি।