তৃণা সাহা, রাজা এবং রুকমা রায়। ফাইল চিত্র।
কেউ নাচছেন। কেউ ঠোঁট মেলাচ্ছেন জনপ্রিয় গানে। কারও মুখে সিনেমার সাড়া জাগানো সংলাপ। কেউ বা স্রেফ দেদার হাসির মুহূর্ত তৈরি করছেন ক্যামেরার সামনে। সৌজন্যে ইনস্টাগ্রাম-ফেসবুকের রিল ভিডিয়ো। আর নেটপাড়ার সাম্প্রতিকতম এই হুজুগে দিব্যি গা ভাসিয়েছেন বাংলা ধারাবাহিকের অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও। সকাল-বিকেল, দুপুর-সন্ধ্যা, যখন খুশি, যেখানে খুশি। মোবাইলেই মজুত তারকাদের টুকরো-বিনোদন।
ইনস্টাগ্রাম-ফেসবুকে খানিক ঘোরাঘুরি করলে যে ছবিটা সামনে আসে, তাতে তারকাদের রিল ভিডিয়োয় নাচেরই পাল্লা ভারী। মজাদার সংলাপের সঙ্গে অভিনয়ও করেন অনেকেই। টেলিপাড়ার ‘রিল-বাজ’দের তালিকায় যে নামগুলো একেবারে উপর দিকে, তাদেরই এক জন তৃণা সাহা। কখনও স্বামী নীলকে নিয়ে, কখনও সহ-অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে, কখনও বা একাই রিল ভিডিয়োয় মজে থাকেন ‘খড়কুটো’র গুনগুন। একা তৃণা নন, অলিভিয়া সরকার, শ্রীমা ভট্টাচার্য থেকে কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিতাভ দাস, ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়, প্রিয়ঙ্কা মিত্র, সোনাল মিশ্ররাও দেদার পোস্ট করেন হরেক স্বাদের রিল।
নেটপাড়ায় তেমন সময় কাটাতে ভালবাসেন না ছোট পর্দার অভিনেত্রী রুকমা রায়। তবে রিল-জোয়ারে সামিল তিনিও। ‘দেশের মাটি’র মাম্পি সোজাসুজিই বললেন, “আমি ভাল নাচতে পারি না। তাই যে সব নাচ সোজা, সেগুলো আমায় বন্ধুরা শিখিয়ে দেয়। মুড থাকলে সেগুলোই কিংবা মজাদার কোনও মুহূর্ত ধরে রাখি রিল ভিডিয়োয়। তবে এই নাচের ভিডিয়োগুলো তৈরি করা কিন্তু বেশ পরিশ্রমের কাজ।”
আর এক অভিনেতা রাজা গোস্বামী আবার নাচের চেয়ে খানিক মজা কিংবা কোনও বার্তা দিতেই রিল বানান। তাঁর কথায়, “রিল মানেই যে তাতে নাচতে হবে, তা তো নয়। ১৫-৩০ সেকেন্ড সময়ের এই ভিডিয়োয় এমন যে কোনও কিছু করা যায়, যা মানুষের মনে দাগ কাটবে। বেশ মজা লাগে কিন্তু।”
কিন্তু শুধুই কি মজা? নাকি তারকাদের রিল-ম্যানিয়ার নেপথ্যে আছে অন্য কোনও লক্ষ্যও? রাখঢাক না রেখেই কিন্তু তা-ও ফাঁস করে দিচ্ছেন খ্যাতনামীরাই। রাজা ওরফে ‘খড়কুটো’র রূপাঞ্জন যেমন বললেন, “অভিনেতা হিসেবে দর্শকের নজর কাড়তে তো হবেই। আগে ছিল শুধু ছবি, এখন রিল ভিডিয়ো এসে যাওয়ায় প্রায় ৩০ সেকেন্ড ধরে মানুষকে নিজের প্রোফাইলে আটকে রাখা যাচ্ছে। মুখ চেনানোটাও যেমন সহজ হচ্ছে, তেমনই আমার পরিচিতি বা ফলোয়ার সংখ্যাও বাড়ছে অনেক বেশি।”
এই ফলোয়ারের বিষয়টায় গুরুত্ব দিচ্ছেন রুকমাও। তাঁর কথায়, “টলিউডে ইদানীং কাজ পাওয়া বা ব্র্যান্ড-সংযোগ নির্ভর করে ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকে তারকাদের ফলোয়ারের সংখ্যার উপরে। পেশাগত পরিচিতির পাশাপাশি তাই নেটমাধ্যমে সক্রিয় থাকাটা ইদানীং খুব জরুরি। নিজের অনুরাগীর সংখ্যাকে একটানে অনেকটা বাড়িয়ে নেওয়ার কাজটা নিঃসন্দেহে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে রিল ভিডিয়ো। মজাও হল, আবার সকলের নজরেও থাকা গেল।”