রাজনীতির রং ছেড়ে নিরপেক্ষ ভাবে যাঁরা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের দিকেই অধিকাংশের সমর্থন গিয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
জনপ্রিয় ধারাবাহিক শ্রীময়ীর ননদাই ‘উপল’আর এক জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’-র বাবা শংকর চক্রবর্তীর সঙ্গে লড়াই করছেন!
এরকম ঘটনা আগে দেখেনি কেউ!
ধারাবাহিকের গল্প যে দিকেই যাক না কেন এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়ে গেল বাস্তবের মাটিতেই। টালিগঞ্জের টেলিভিশন পাড়ার রাশ কাদের হাতে থাকবে তা নির্ধারিত হল রবিবার, আর্টিস্ট ফোরামের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায়। কার্যনির্বাহী সভাপতি হলেন শংকর চক্রবর্তী। তিনি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভরত কলকে হারিয়ে দিলেন ৮৬ ভোটে।
সোমবার সকালে ফল প্রকাশের পর আনন্দবাজার ডিজিটালকে ভরতবললেন, ‘‘আমি ৬০৬টি ভোট পেলাম। শংকরদা পেলেন ৬৯২ ভোট। ভোট ভাগ হয়ে গিয়েছে অঞ্জনা বসুর সঙ্গে। তিনি ২৯৫ভোটপেয়েছেন। পার্থসারথি দে পেলেন২২৪ ভোট। তবে আমি খুশি শংকর চক্রবর্তীর মতো একজন সিনিয়র আর্টিস্ট ফোরামের নতুন মুখ হয়ে এলেন। তিনি আমাদের ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট আর অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় সাধারণ সম্পাদক। ফোরামের এই নির্বাচনী ফলাফল থেকে এটুকু স্পষ্ট যে এই ফোরামে কোনও রাজনৈতিক রং লাগবে না।’’টেলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, বিজেপির মুখ হয়ে আসা একজন প্রার্থীও এই নির্বাচনে জেতেননি। পাশাপাশি, 'বিশ্বাস ভাইদের' মনোনীত সদস্যরাও এই নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করেননি।
আরও পড়ুন:‘সৃজিত যা দিয়েছে সেটাই ভ্যালেন্টাইন ডে-গিফ্ট’, কী দিলেন মিথিলাকে!
ফোরামের সদস্য হিসেবে এই সংগঠনে যদিও সোহম, জুন মাল্য, সোনালী চৌধুরীথেকে দিগন্ত বাগচী, রানা মিত্রের মতো রাজনৈতিক মুখের উপস্থিতি আছে। আছে বামপন্থী প্রার্থীদের উপস্থিতিও। যেমন সহ-সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সহকারী সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছেন আর এক বামপন্থী প্রার্থী দেবদূত ঘোষ।
বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বললেন, ‘‘আর্টিস্ট ফোরাম বরাবর রাজনীতিকে ভোটের বাইরে রাখার চেষ্টা করেছে। মাঝখানে জোর করে ফোরামে রাজনীতি ঢোকানোর চেষ্টা হয়েছিল।কিন্তু ভোটের ফল বলে দিচ্ছে, রাজনীতির রং ছেড়ে নিরপেক্ষ ভাবে যাঁরা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের দিকেই অধিকাংশের সমর্থন গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন:ক্যাট এ বার সুপারহিরো
যাঁর অঙ্গুলিহেলনে টালিগঞ্জ পাড়া চলে বলে শিল্পী-কলাকুশলীদের অধিকাংশের মত, সেই স্বরূপ বিশ্বাসও প্রায় একই সুরে বললেন,‘‘যাঁরা আর্টিস্ট ফোরামে রাজনীতি ঢোকানোর চেষ্টা করেছিলেন ধাক্কা তাঁরাই খেয়েছেন। শিল্পীরা একজোট হয়ে তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন।’’ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই আরও বলেন, ‘‘যাঁরা জিতেছেন তাঁদের সকলকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আশা করি তাঁরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সব শিল্পীর ভালর জন্যই কাজ করবেন।’’ কিন্তু অনেকে যে বলছেন, ভোটের এই ফল স্বরূপ বিশ্বাসের জন্য একটা বড় ধাক্কা? স্বরূপের জবাব: ‘‘এই ভোটের মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। আমরা কখনও এর মধ্যে রাজনীতি ঢোকানোর চেষ্টা করিনি। এখানে যদি তৃণমূলের প্যানেল বলে কিছু থাকত এবং সেই প্যানেল যদি হারত তা হলে বলতে পারতেন, আমাদের জন্য ধাক্কা। কিন্তু যাঁরা জিতেছেন, সেই শংকরদা বা অরিন্দমদা আমার বাইরে নন। ওঁদের দু’জনের সঙ্গেই আমার খুব ভাল সম্পর্ক। আবার ভরত কল এবং রাহুল চক্রবর্তীও আমার খুব বন্ধু।’’