দিলীপের এই ‘রগড়ে দেওয়ার’ কথায় আপত্তি জানিয়েছে টলিউডের একাংশ।
ফের বিতর্কিত মন্তব্য দিলীপ ঘোষের। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিল্পীদের ‘রগড়ে দেওয়ার’ কথা বলেছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। দিন কয়েক আগে টলিউডের কয়েকজন শিল্পীর তৈরি ‘নিজেদের মতে, নিজেদের গান’ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই এই মন্তব্য করেন তিনি। সেই গানে যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই পরিচিত বিজেপি বিরোধী হিসেবে।
দিলীপের এই ‘রগড়ে দেওয়ার’ কথায় আপত্তি জানিয়েছে টলিউডের একাংশ। এ বার সেই তালিকায় জুড়ে গেল অঙ্কুশ হাজরার নাম। দিলীপের নাম না নিয়েই তাঁকে কটাক্ষ করে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছেন অঙ্কুশ। তিনি লিখেছেন, ‘ইশ সব জায়গাতেই যদি একটু শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে লোক নেওয়া হতো, তা হলে যে কেউ শিল্পীদের রগড়ে দিয়ে যেত না’। অর্থাৎ শিক্ষার অভাবেই দিলীপ এমন একটা মন্তব্য করেছেন, দাবি অভিনেতার।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন টলিউডের বহু শিল্পী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নাম লিখিয়েছেন, অঙ্কুশ তখনও নিজের গায়ে রাজনীতির রং লাগতে দেননি। তবে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করতে কখনওই পিছপা হননি তিনি। টেলিভিশন চ্যানেলে নির্দিষ্ট একটি দলের নেতার ভাষণকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার অভিযোগ থেকে শুরু করে সহকর্মীদের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে ঠাট্টা, সব ক্ষেত্রেই নিজের কথা তুলে ধরেছেন অভিনেতা। এ ক্ষেত্রেও অন্যথা হল না।
শুধু অঙ্কুশ নন, বিজেপি-র সদস্য রূপাঞ্জনা মিত্রও সমর্থন করতে পারেননি দলনেতার এই মন্তব্য। অভিনেত্রীর কথায়, “দিলীপবাবুকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাঁর এই মন্তব্য সমর্থন করতে পারিনি। এখন রাজ্য রাজনীতিতে টলিউডের শিল্পীদের প্রসঙ্গ এনে শাসক বা বিরোধী পক্ষ যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করছে, সেগুলো একেবারেই ভাল লাগছে না।” দলের আরও এক সদস্য কৌশিক রায়ের গলায় যদিও উল্টো সুর। তাঁর কথায়, “দিলীপবাবু কোন প্রসঙ্গে কী বলেছেন সেটা আমি জানি না। তবে যে দলে এতজন তারকা প্রার্থী, সাংসদ রয়েছেন সেই দলের নেতা শিল্পীদের নিয়ে কোনও কুমন্তব্য করবেন বলে আমি মনে করি না। ওঁর বক্তব্যকে কোনও ভাবে ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।” ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের সুবাদে এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তার শিখরে তিনি। পর্দার ‘সৌজন্য’ বাস্তবেও সৌজন্য বজায় রাখায় বিশ্বাসী। তাঁর কথায়, “অন্য কোনও পেশা থেকে কেউ যদি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে আসেন, আমরা কিন্তু তাঁকে রগড়ে দেব না। বরং সাহায্য করব”।
যে গান ঘিরে এই বিতর্ক, মূলত ফ্যাসিবাদ এবং ধর্মের রাজনীতির বিরোধিতা করেই লেখা হয়েছিল সেই গান। সেই গানে উপস্থিত শিল্পীদের একজন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। নেট মাধ্যমে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপি-তে যে সব শিল্পীরা যোগদান করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও দিলীপের এই ‘রগড়ানি’ প্রযোজ্য কি না! অভিনেতার মতে, শিল্পীরা বিজেপি-র হয়ে কথা বললেই তাঁদের আর কোনও রকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে না।