শ্রীলেখা মিত্র —ফাইল চিত্র।
সপ্তম দফা নির্বাচনের দিন নেটমাধ্যম উত্তাল একটি পোস্টে। কী সেটি? জনৈক নেটাগরিকের এক বার্তায় শাসকদল থেকে বিজেপি-তে যোগদানকারী রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রী সহ তারকা প্রার্থীদের যোগাযোগ নম্বর রয়েছে। পোস্ট শুরু হয়েছে ব্যঙ্গাত্মক বার্তায়, ‘করোনায় ভয় কিসের? আপনার পাশে মানুষের কাজ করার জন্য প্রাণ আনচান করা নেতারা! মাস্ক, স্যানিটাইজার, রক্ত, অক্সিজেন, অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য এক্ষুনি ফোন করুন...’। পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্য সহ বহু জন ইতিমধ্যেই নিজেদের পাতায় শেয়ার করেছেন সেই পোস্ট। বিতর্কের জন্ম তার পরেই। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে ইতিমধ্যেই একাধিক তারকা প্রার্থীর অভিযোগ, সম্ভবত এই পোস্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ছড়িয়েছে বাম দল। কারণ, তালিকায় কোনও বাম প্রার্থীর যোগাযোগ নম্বর নেই। এ ভাবে কারোর মুঠোফোন নম্বর প্রকাশ্যে নিয়ে আসা যায়? প্রশ্ন তাঁদের।
সত্যিই এই কাজ বাম দলের? জানতে আনন্দবাজার ডিজিটাল যোগাযোগ করেছিল বাম দলের সমর্থক শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে। পরিচালক, অভিনেত্রী ব্যস্ত তাঁর প্রথম ছবি ‘বিটার হাফ’-এর ডাবিংয়ে। স্টুডিয়ো থেকেই জানালেন, ‘‘আমার কাছেও এই পোস্টটি এসেছিল। দেখে আমারও হাত নিশপিশ করছিল পোস্ট করার জন্য। কিন্তু করিনি। কারণ কোথাও গিয়ে আমারও মনে হয়েছিল, এ ভাবে কারোর ব্যক্তিগত যোগাযোগ নম্বর বোধ হয় ফাঁস করে দেওয়া উচিত নয়।’’ তারকা প্রার্থীদের অভিযোগের উত্তরে শ্রীলেখার দাবি, তিনি সত্যিই জানেন না, কার মাথা থেকে এটি বের হয়েছে। জানেন না, এটি আদৌ বাম দলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্ট কিনা। পাশাপাশি প্রশংসাও করেছেন পোস্টটির। বলেছেন, ‘‘বাম দল আক্ষরিক অর্থেই শিক্ষিত। যদি করেই থাকে, তা হলে সত্যিই বুদ্ধিদীপ্ত বদমায়েশি করেছে।’’ নিজের উত্তরের স্বপক্ষে অভিনেত্রীর আরও সাফাই, যিনিই কাজটি করে থাকুন তিনি বুঝেছেন কাজের ছুতোয় তারকাদের দলবদল বা রাজনীতিতে যোগদান সাধারণের কাছে প্রচণ্ড হাস্যকর। কেউ এই যুক্তি বিশ্বাস করেনি। তাই এই ধরনের পোস্ট নেটমাধ্যমে শেয়ার হতেই ভাইরাল।
বাম সমর্থকেরা কাজ করতে চান না? তাঁদের যোগাযোগ নম্বর নেই কেন? শ্রীলেখার পাল্টা খোঁচা, ‘‘বাম দল ইতিমধ্যেই কাজ করে দেখিয়েছে। শ্রমজীবী ক্যান্টিন, ১ টাকার বাজার, রক্তদান শিবির, ফ্রি কোচিং সেন্টার খুলে। রাজ্যে এরাই এক মাত্র দল, যারা লোক জানিয়ে কাজ করে না। চুপচাপ নিজেদের মতো করে কাজ সারে।’’ এখানেই থামেননি তিনি। উদাহরণ হিসেবে জানিয়েছেন, শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র আর অঞ্জনা বসু সোনারপুর দক্ষিণের ৩ দলের ৩ প্রার্থী। ভোট মিটতেই লাভলি আর অঞ্জনার দেখা পাচ্ছেন না সেখানকার বাসিন্দারা। শুভম কিন্তু নিজে ঘুরে ঘুরে কোভিড রোগীর বাড়ি স্যানিটাইজ করাচ্ছেন।