Anupam Roy

Anupam Roy: ফিরতে হলে বেতনের হিসেব কষে চাকরি ছাড়লেও গান ফেরায়নি অনুপমকে

অবশেষে এল চাকরি ছাড়ার দিন! শেষবেলায় ছোট্ট অঙ্ক কষেছিলেন অনুপম

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২১ ১৭:০৪
Share:

আর ব্যাঙ্গালোরে ফিরে গেলেন না অনুপম।

আজকের অনুপম রায় তখন বেঙ্গালুরুতে প্রথম সারির মার্কিন সংস্থার চাকুরিজীবী। ছেঁড়া জিন্স, শার্ট, হাওয়াই চপ্পল, ফর্মাল পোশাক। মাস গেলে ব্যাঙ্কের খাতায় মোটা টাকার বেতন। টানা ছ’বছর নিশ্চিন্ত জীবন কাটিয়ে হঠাৎ অনিশ্চয়তায় ঝাঁপ। চাকরি ছেড়ে গানবাজনায় ডুবলেন শিল্পী-সুরকার।

পুরোটাই অঙ্ক কষে? নাকি জীবন-খাতায় অঙ্ক আর আবেগের সহবাস?

Advertisement

শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ আড্ডায় অনুপম রায়ের পেশা আর নেশার গল্প শুনতে শুনতে অনেকেরই হয়তো মনে পড়ছিল ছ’য়ের দশকের ছবি ‘দেয়া নেয়া’র কথা। যেখানে উত্তমকুমার গান ভালবেসে বাবার বিশাল সম্পত্তি, নিশ্চিন্ত জীবন থেকে মুখ ফিরিয়েছিলেন। অনুপম যদিও বলেছেন, ‘‘আমার ক্ষেত্রে আবেগ আর অঙ্ক দুটোই মিলেমিশে এসেছিল।’’

কী রকম? বরাবরই বাঁধাধরা চাকরিতে মন বসেনি ‘অটোগ্রাফ’ ছবির গীতিকার-সুরকার-গায়কের। তাই কাজ শুরুর ছ’মাস পরেই হাঁফিয়ে উঠেছিলেন। খালি ভাবতেন, কবে নিস্তার মিলবে এর হাত থেকে?

কিন্তু সব কিছুই তো আর ভাবলেই হয়ে যায় না! দুম করে চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ফিরে লড়াইয়ে নামবেন, এমন স্বপ্নও ছিল না তাঁর। অতঃকিম? দ্বিধায় দুলতে দুলতেই ২০১০-এর পুজো, এবং মিরাকল! অনুপমের ‘অটোগ্রাফ’ আর ‘বেঁচে থাকার গান’ হিট।

তিনি হয়তো বুঝেছিলেন, আগামী দিনগুলো লেখা হতে চলেছে তাঁর নামে। নভেম্বর-ডিসেম্বরের উদযাপনের দিনে গান শোনানোর আমন্ত্রণ পেতে শুরু করলেন শিল্পী। অনুপমের কথায়, ‘‘দেখছি, একটু একটু করে লোকের আমার গান ভাল লাগছে। তখনও নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না!’’

শিল্পীর পরবর্তী পদক্ষেপ ছায়াছবিতে গান। এসভিএফ তাঁকে ডাকে ‘চলো পাল্টাই’ ছবির গানে সুর দেওয়ার জন্য। তত দিনে তাঁর গাওয়া ‘বাড়িয়ে দাও তোমার হাত’ গানের দুনিয়ায় বড়সড় দাগ কেটে ফেলেছে!

Advertisement

অনুপমের অফিসের হাজিরা খাতায় উপস্থিতির সংখ্যা ক্রমশ কমে চার দিন। সোম থেকে বৃহস্পতি কাজে ডুব। শুক্রবার বিমানপথে নিজের শহরে। সেখানে তাঁর গানের মরসুম! একটা সময়ের পরে শরীর বিদ্রোহ করতে শুরু করল। জনপ্রিয়তার হাত ধরে অবশেষে এল চাকরি ছাড়ার দিন! শেষবেলায় ছোট্ট অঙ্ক কষেছিলেন অনুপম। নতুন বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদোন্নতির সঙ্গে বেতনের সংখ্যা বাড়িয়ে তবেই বিদায় জানিয়েছিলেন নিশ্চিন্ত জীবনকে। কে বলতে পারে, আজ যাঁরা মাথায় তুলেছেন, কাল তাঁরাই পায়ে দলবেন না?

যদিও তেমনটা হয়নি। শহর কলকাতা তাঁকে মাথায় করে রেখেছে। আশা করা যায় রাখবেও। গানের জন্য চাকরি থেকে মুখ ফিরিয়েছিলেন অনুপম। গান আজও শুধু তাঁর হয়েই রয়ে গিয়েছে...।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement