‘ফাগুন বউ’ ধারাবাহিকে একসঙ্গে অভিষেক এবং বিক্রম।
জীবন আজকাল বড্ড অনিশ্চিত। এই একটা মানুষ ছিল, এই নেই! আমরা কি ক্রমশ এটার সঙ্গেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি? না হলে কালও একটা মানুষ যে শ্যুটিং করছিল, কথা বলছিল, আজ সকালে সে নেই! শুনেছি, বুধবারও শ্যুটিং করছিলেন অভিষেকদা। ফ্লোরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার সকালে সেই মানুষটাই সকলের ধরাছোঁয়ার বাইরে!
অভিনেতা কেমন, কীসে কেমন অভিনয় করেছেন, সে সব তো কাজের হিসেব। যেটা আসল, তা হল ভিতরের মানুষটা কেমন। অভিষেকদা বললেই একটা ভীষণ ভাল, ভীষণ প্রাণখোলা মানুষ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সবার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক, সবার সঙ্গে হেসে কথা বলতেন, জমিয়ে আড্ডা মারতেন, হা হা করে হাসতেন— সেই সমস্তটা এখন স্মৃতি হয়ে গেল।
আমার সঙ্গে আলাপ ২০১৮ সালে, ‘ফাগুন বউ’ ধারাবাহিকের সেটে। কালিম্পংয়ে আউটডোর হয়েছিল। প্রত্যেকদিন শ্যুটিং প্যাকআপের পরে জমিয়ে আড্ডা হতো সবাই মিলে। অভিষেকদা, আমি, ঐন্দ্রিলা। অঙ্কুশও এসেছিল তখন। বিদীপ্তাদিও বসে পড়তেন আমাদের সঙ্গে। মজার মজার সব গল্প বলতেন অভিষেকদা। ওঁর সময়ে ছবির শ্যুটিং, ডাবিংয়ের অভিজ্ঞতা, এখনকার সঙ্গে তার কতটা ফারাক, ভাগ করে নিতেন আমাদের সঙ্গে। সেই হইহই করে কাটানো দিনগুলো ভোলার নয়। এই কিছু দিন আগেও ওঁর ধারাবাহিকের সেটে গিয়েছিলাম। তখনও কত গল্প হল! বয়সের এতটা ফারাক সত্ত্বেও আমরা কিন্তু ভীষণ ভাল বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম।
আমার বা ঐন্দ্রিলার সঙ্গে অভিষেকদার যখন আলাপ, আমাদের কয়েক বছর কাজ হয়ে গিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। অভিষেকদা কিন্তু আমাদের সেই সম্মানটা দিতেন। অথচ আমাদের থেকে কত বড়! বয়সে, অভিজ্ঞতায়। ইন্ডাস্ট্রিতেও এতগুলো বছর কেটেছে ওঁর। তবু ছোটদের প্রাপ্য সম্মানটা দিতে ভুলতেন না। এটাও যে কত বড় একটা গুণ!
আর এই সব কিছু নিয়েই বোধহয় অভিষেকদা থেকে যাবেন। আমাদের সবার মনের মধ্যে।