রবীন্দ্রনাথ জাহাজে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, খবর পৌঁছয় আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এয়ারেসের অভিজাত পরিবারের মেয়ে ওকাম্পোর কানে। তত দিনে রবীন্দ্রনাথের ‘গীতাঞ্জলি’র ফরাসি অনুবাদ পড়ে ফেলেছেন তিনি। মুগ্ধতা ছিল বহু দিন ধরেই। ওকাম্পো নিজেও এক জন লেখক। তাঁর ব্যবস্থাপনায় এবং তৎপরতায় রবীন্দ্রনাথকে ওকাম্পোর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
ভিক্টর-এলিওনোরার জুটি আর্জেন্টিনীয় ছবিতে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর কাহিনি এ বার সেলুলয়েডে। তবে নির্দেশনায় কোনও বাঙালি নন। এমনকি, ভারতীয়ও নন। সুদূর আর্জেন্টিনাবাসী পরিচালক পাবলো সিজার। আর্জেন্টিনার লেখক ওকাম্পোর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নামহীন সম্পর্ক নিয়ে চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের ভূমিকায় দেখা যাবে বাঙালি অভিনেতা ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ওকাম্পোর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আর্জেন্টিনার অভিনেত্রী এলিওনোরা ওয়েক্সলার। ছবিতে দেখা যাবে বাঙালিনী রাইমা সেনকেও।
১৯২৪ সাল। জলপথে পেরুর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু জাহাজেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন নোবেলজয়ী সাহিত্যিক। সেই সময়ে জাহাজটি আর্জেন্টিনা পেরোচ্ছিল। রবীন্দ্রনাথ জাহাজে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, খবর পৌঁছয় আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এয়ারেসের অভিজাত পরিবারের মেয়ে ওকাম্পোর কানে। তত দিনে রবীন্দ্রনাথের ‘গীতাঞ্জলি’র ফরাসি অনুবাদ পড়ে ফেলেছেন তিনি। মুগ্ধতা ছিল বহু দিন ধরেই। ওকাম্পো নিজেও এক জন লেখক। তাঁর ব্যবস্থাপনায় এবং তৎপরতায় রবীন্দ্রনাথকে ওকাম্পোর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তী কালে বাঙালি সাহিত্যিকদের লেখা থেকে জানা যায়, ওকাম্পো অত্যন্ত সেবাপরায়ণা মানুষ। ৩৪ বছরের লেখক ষাটোর্ধ রবীন্দ্রনাথের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর ১৯২৫ সালের জানুয়ারি মাসে আর্জেন্টিনা থেকে বিদায় নেন রবীন্দ্রনাথ। সাহিত্যিকদের মতে, এই দীর্ঘ সময়ে তাঁদের মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু সেই সম্পর্ককে কেউ কোনও দিন কোনও নাম দিতে পারেননি। কেউ মনে করেন প্রেম, কেউ বা বন্ধুত্বের তকমা দেন।
‘থিংকিং অব হিম’
আগামী ৬ মে সেই ছবি মুক্তি পেতে চলেছে। নাম ‘থিংকিং অব হিম’। পরিচালক পাবলোর কথায়, ‘‘১৯৯৪-এ প্রথম ভারতকে চিনেছি। এখনও সেই প্রক্রিয়া চলছে। কারণ এত বড় দেশের হৃদয়কে বুঝতে পারা সহজ নয়। এই দেশে শ্যুটিং করার সময়ে নতুন করে ভারতবাসীর মননকে বুঝতে পেরেছি বলে মনে হয়। ভালবাসি এই দেশকে।’’ ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন ভারতীয় পরিচালক সূর্য কুমার।