Actor’s Death

প্রয়াত অভিনেতা অমরনাথ মুখোপাধ্যায়, হিন্দিতে সুযোগ দেন উত্তমকুমার, বললেন পুত্র চন্দ্রদীপ

‘মৌচাক’, ‘বসন্ত বিলাপ’-সহ একাধিক বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। অমরনাথ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর মুম্বইয়ে তাঁর পুত্র চন্দ্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ১৫:৪৩
Share:

বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে প্রয়াত হন বর্ষীয়ান অভিনেতা অমরনাথ মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

প্রয়াত হলেন বাংলা ছবির এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা অমরনাথ মুখোপাধ্যায়। পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তারই সঙ্গে ফুসফুসে ধরা পড়েছিল ফাইব্রোসিস। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। শুক্রবার টলিপাড়ার অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় খবরটি সমাজমাধ্যমে জানান।

Advertisement

৭০-এর দশকে বাংলা ছবিতে পা রাখেন অমরনাথ। বাবা ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা হরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। অমরনাথের প্রথম ছবি ছিল ‘মেঘ কালো’। এই ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা সেন। এর পর ‘কুহেলি’, ‘ছিন্নপত্র’ ছবিতে সুযোগ পান। তবে পরবর্তী সময়ে ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘মৌচাক’, ‘অগ্নিশ্বর’, ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ এবং ‘বিদ্রোহী’ ছবিতে তাঁর অভিনয় আজও দর্শক মনে রেখেছেন। বাংলা ছবির পাশাপাশি হিন্দি ছবিতেও নিজের প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন অমরনাথ। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য হিন্দি ছবি হল ‘অমানুষ’, ‘ডিস্কো ডান্সার’। হিন্দি সিরিয়ালের প্রথম যুগে ‘ব্যারিস্টার বিনোদ’ এবং রমেশ সিপ্পির ‘কিসমত’-এও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বাংলায় ‘জননী’ ধারাবাহিকেও দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন অমরনাথ। অজস্র বাংলা বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বেদের মেয়ে জোস্‌না’। অভিনেতার শেষ বাংলা ছবি ছিল তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘আলো’। তরুণ মজুমদারেরই ‘দুর্গেশনন্দিনী’ সিরিয়ালেও অভিনয় করেছিলেন অমরনাথ।

পরিবারের সঙ্গে অন্য মেজাজে অমরনাথ। ছবি: পারিবারিক অ্যালবাম থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে প্রয়াত অভিনেতার পুত্র চন্দ্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানালেন, শুক্রবার প্রয়াত অভিনেতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ২০০৫ সাল থেকে মুম্বইয়ে ছেলের কাছেই থাকতেন অমরনাথ। কলকাতায় কি অভিনেতার কোনও স্মরণসভার পরিকল্পনা রয়েছে পরিবারের তরফে? চন্দ্রদীপ বললেন, ‘‘এখন তো আমাদের কলকাতাতে কোনও বাড়িও নেই। আমি এবং আমার স্ত্রী চাকরিজীবী। তাই কলকাতায় গিয়ে আলাদা করে কোনও স্মরণসভা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’

Advertisement

সুদীর্ঘ কেরিয়ারে মুম্বই এবং কলকাতায় প্রায়শই যাতায়াত করতে হত অমরনাথকে। চন্দ্রদীপ জানালেন, ‘অমানুষ’ ছবিতে অমরনাথকে সুযোগ করে দেন উত্তমকুমার। চন্দ্রদীপের কথায়, ‘‘তিনি শক্তি সামন্তকে বলেছিলেন বলেই বাবা সুযোগ পান। ১৯৭৪ সালে তার পর বাবা বম্বে চলে আসেন। তার পর ১৯৮৫ সালে আবার আমরা কলকাতায় ফিরে যাই।’’ ২০০৫ সালে পাকাপাকি ভাবে মুম্বইয়ে বাস করতে থাকেন অমরনাথ। চন্দ্রদীপ বললেন, ‘‘বাবাকে আমি বলেছিলাম যে, আর নয়। কারণ ওঁর শরীর আর পেরে উঠছিল না। কিন্তু তার পরেও কলকাতায় গিয়ে অভিনয় করেছিলেন বাবা।’’

বাংলা ও হিন্দি ছবিতে সমান্তরাল ভাবে কাজ চালিয়ে গেলেও এই শিল্পী শেষ জীবনে কিছুটা আড়ালেই ছিলেন। তা নিয়ে অবশ্য তাঁর পুত্র ততটা বিচলিত নন। চন্দ্রদীপ বললেন, ‘‘এটাই তো নিয়ম। সময়ের সঙ্গে এক দিন সবাইকেই তাঁর জায়গা ছেড়ে দিতে হয়। বাবাও সময় মতো নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।’’ অমরনাথ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকের আবহ টলিপাড়ায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement