দীর্ঘ সময় পর আবার বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে চাইছেন অঞ্জন শ্রীবাস্তব। ছবি: সংগৃহীত।
জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কলকাতায়। কিন্তু হাতেগোনা বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। কারণ দর্শক তাঁর যে অভিনয় জীবনের কথা জানেন, তার সবটাই বলিউডে। অঞ্জন শ্রীবাস্তব। ‘দামিনী’, ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’, ‘চক দে ইন্ডিয়া’র মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে তাঁর অভিনয় দর্শকের নজর কেড়েছে। অঞ্জন এ বার অবশ্য বাংলা ছবিতে কাজ করতে চাইছেন।
কিন্তু বেশ তো রয়েছেন মুম্বইতে। কেরিয়ারের এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে বাংলায় প্রত্যাবর্তনের ইচ্ছা কেন অঞ্জনের? আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতা স্পষ্ট বললেন, ‘‘বছর দশেক আগে তখন এক বার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ তখন সহযোগিতা করেনি! এত বছর অভিনয় করছি, কিন্তু বাংলায় সে ভাবে কাজ করলাম না। এই আক্ষেপটা এ বার একটু দূর করতে চাই।’’
একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও বাংলায় অঞ্জনের কাজের সংখ্যা হাতেগোনা। ছবি: সংগৃহীত।
১৯৭৮ সালে অভিনয় সূত্রে কলকাতা ছাড়েন অঞ্জন। কিন্তু এখনও তিনি বাংলায় চৌখস। বাংলা ছবির কথা বললেই ‘কাবুলিওয়ালা’ ছবিতে ছবি বিশ্বাসের কথা মনে পড়ে যায় তাঁর। এই প্রজন্মের পরিচালকদের মধ্যে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কাজ নিয়েও তিনি অবগত। অঞ্জনের কথায়, ‘‘পরিচালক বা চিত্রনাট্য চাইলে আমি ফের আমার বাংলা বলার ভঙ্গিকে ঘষেমেজে নিতে রাজি আছি।’’ এখনকার বাংলা ছবি নিয়ে ইচ্ছে থাকলেও নিয়মিত খবরাখবর রাখতে পারেন না অঞ্জন। এই প্রসঙ্গেই বললেন, ‘‘চিরকাল তো উত্তমকুমার থাকবেন না। সৌমিত্রবাবু তো আজীবন নায়ক থাকতে পারবেন না। এখন উৎপলদাও (উৎপল দত্ত) নেই, বিকাশ রায়ও নেই। এক সময় এঁদের কাজ দেখেই তো শিখেছি। ভাল অভিনেতাদের নিয়ে আধুনিক বাংলা ছবি তৈরি হলে দর্শক এখনও সেটা দেখবেন।’’
সম্প্রতি, মেঘনা গুলজ়ারের ‘স্যাম বাহাদুর’ ছবির শুটিং শেষ করেছেন অঞ্জন। বলছিলেন, ‘‘বয়সের কারণেই এখন খুব বেছে বেছে কাজ করি। কিন্তু ওঁরা আমাকেই চাইছিলেন। তাই রাজি হতে হল।’’ এই প্রসঙ্গেই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন অঞ্জন— পারিশ্রমিক। বললেন, ‘‘শুনেছি, টালিগঞ্জে সবাই ভাবে মুম্বইয়ের শিল্পী মানেই পারিশ্রমিক বেশি। সেটা কিছুটা হলেও ঠিক। কিন্তু আঞ্চলিক ছবিতে অভিনয় করলে আমি তাদের বাজেট অনুযায়ী পারিশ্রমিক নেব।’’
আগামী ২২ এপ্রিল কলা মন্দিরে নাটকের (‘ইশারো ইশারো মেঁ’) শো করতে কলকাতায় আসছেন অঞ্জন। প্রায় ৭ বছর পর ছেলেবেলার শহরে পা রাখবেন অভিনেতা। তাই শুধু কলকাতা নয়, তারাপীঠ, দেওঘর এবং শান্তিনিকেতনেও সপরিবার যাবেন তিনি। ইচ্ছে রয়েছে কলকাতার পরিচালক এবং প্রযোজকদের সঙ্গে দেখা করার। বললেন, ‘‘বাবুদা (সন্দীপ রায়) এবং গৌতমদার (গৌতম ঘোষ) সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছি, আরও কয়েক জন পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে।’’