‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে কী বললেন নাসিরউদ্দিন? ছবি: সংগৃহীত।
বলিউডের অন্যতম কৃতী ও নামজাদা অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহ। তবে সেটাই তাঁর একমাত্র পরিচয় নয়। কৃতী অভিনেতার পাশাপাশি স্পষ্টবক্তাও তিনি। রাজনৈতিক ভাবে বেশ সজাগ নাগরিকও। সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কে মোটামোটি ওয়াকিবহাল থাকেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। বিতর্ক তৈরি হলেও নিজের মতপ্রকাশ করতে কখনও পিছপা হন না নাসির। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে চলতি বছরের সব থেকে বিতর্কিত ছবি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে মুখ খুললেন নাসিরউদ্দিন শাহ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নাসিরউদ্দিন শাহ জানান, তিনি এখনও পর্যন্ত এই ছবিটি দেখেননি এবং ভবিষ্যতেও তাঁর ওই ছবি দেখার কোনও ইচ্ছা নেই। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মতো ছবির বক্স অফিস সাফল্য আদতে ভয়ঙ্কর একটা ইঙ্গিত, দাবি নাসিরের। তাঁর মতে, হিটলারের সময়ে নাৎসি জার্মানিতেও নাকি ঠিক এ রকম ভাবেই ছবি তৈরির রীতি চালু করা হয়েছিল। সরকারের প্রশস্তি করে ছবি বানানোর নিদান দেওয়ার ফলে বহু জার্মান ছবিনির্মাতা নাকি সেই সময় দেশ ছাড়তেও বাধ্য হয়েছিলেন। নাসিরের দাবি, এ দেশেও এখন ঠিক তাই হচ্ছে। ‘ভীড়’, ‘ফরাজ়’, ‘অফওয়া’র মতো ছবি মুক্তি পাওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ বক্স অফিসে রমরমিয়ে চলছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মতো ছবি।
নাসিরের মতে, এই ধরনের ছবির মাধ্যমে দেশের জনগণকে একটা ভুল বার্তা দেওয়ার নিরন্তর চেষ্টা চলছে। একাধিক বিতর্কের আবহেও গত ৫ মে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেন পরিচালিত ছবি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। একের পর এক বিতর্ক হলেও বক্স অফিসে ব্যবসার দিক থেকে কোনও ক্ষতি হয়নি এই ছবি। বরং, ২০০ কোটি টাকার গণ্ডি পেরিয়ে এখনও রমরমিয়ে চলছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। বাণিজ্যিক ভাবে সফল হলেও প্ররোচনামূলক ছবির তকমা পেয়েছে সুদীপ্ত সেনের এই ছবি। ছবির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন দক্ষিণী তারকা কমল হাসন, বলিউড পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের মতো বিনোদন জগতের নামজাদা ব্যক্তিত্বেরা। এ বার সেই তালিকায় নাম জুড়ল অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহেরও।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন নাসিরউদ্দিন শাহ। দেশের নাগরিকদের মনে সুকৌশলে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, দাবি করেন তিনি। তাঁর মতে, এই মুসলিম-বিদ্বেষটাই এখন নাকি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী তিনি। বর্ষীয়ান অভিনেতার আশা, ‘‘এক দিন নিশ্চয়ই এই ঘৃণার রাজনীতি বন্ধ হবে।’’