আমি একটাও শো করিনি, যেখানে বাপ্পিদার গান গাইনি। প্রত্যেক শোয়ে ‘রম্ভা হো’, ‘হরি ওম হরি’ গেয়েছি। ‘রম্ভা হো’ গানের শেষে অনেকগুলো হো হো হো... হতে থাকে। সেটা উনি ইলেকট্রনিক্যালি করেছিলেন।
ফাইল চিত্র।
‘বাপ্পিদা (লাহিড়ি) ছিলেন, উনি এ রকম করতেন’... এখন ওঁর সম্পর্কে কথা বলতে গেলে অতীত হিসেবে বলতে হচ্ছে, সেটাই বড় কষ্টকর। একদম বাচ্চাদের মতো ছিলেন, সব সময়ে হাসিখুশি। একটা আনন্দের পরিবেশ থাকত ওঁর আশপাশে। আর সৃষ্টি করার ক্ষমতাও ছিল।
ইন্ডাস্ট্রিতে বাপ্পিদা ছিলেন ট্রেন্ডসেটার, ইনোভেটর। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন ধরনের মিউজ়িক নিয়ে এসেছিলেন তিনি। নাচের একটা স্টাইল তৈরি হয়েছিল ওঁর গানের সঙ্গে। আর শুধু যে ডিস্কো গান তৈরি করেছেন, তা নয়। কত মেলোডি গানও তো করেছেন, যেমন ‘চিরদিনই’, ‘কভি অলবিদা না কহনা’। মাঝেমাঝে এই গানটা মনে-মনে গুনগুন করি।
আমি একটাও শো করিনি, যেখানে বাপ্পিদার গান গাইনি। প্রত্যেক শোয়ে ‘রম্ভা হো’, ‘হরি ওম হরি’ গেয়েছি। ‘রম্ভা হো’ গানের শেষে অনেকগুলো হো হো হো... হতে থাকে। সেটা উনি ইলেকট্রনিক্যালি করেছিলেন। তখনকার দিনে এ রকম কাজ করা সহজ ছিল না। আমি যখন স্টেজে শো করি, তখন সেটা মুখে করি। তার পর শ্রোতাদেরও জয়েন করতে বলি। ‘ডিস্কো সং’-এর ধারা বাপ্পিদাই শুরু করেন। উনি ছিলেন ডিস্কো কিং।
আমার কেরিয়ারেও বাপ্পিদার অনেক অবদান রয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা উনি আমাকে আমার মতো করে গাইতে দিয়েছিলেন। বাপ্পিদার শুধু একটাই কথা ছিল, ‘‘যাও, গানটা হিট করে দিও।’’
পরিবারঅন্ত প্রাণ ছিলেন তিনি। সাজতেও খুব ভালবাসতেন। সোনা পরতে ভালবাসতেন, নীল-লাল নানা রঙের জ্যাকেট পরতেন, ডার্ক সানগ্লাস, ফ্যাশনেবল জুতো ছিল পছন্দের। হয়তো হাতে নতুন কিছু পরেছেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘এটা নতুন না কি?’’ ব্যস, খুব আনন্দ পেতেন। অনেকে ওঁর স্টাইল নিয়ে মজা করতেন। কিন্তু উনি হেসে সে সব উড়িয়ে দিতেন। উনি নিজেকে রকস্টার ভাবতেন আর এক জন রকস্টারের মতোই জীবনের শেষ দিন অবধি কাটিয়ে গিয়েছেন।
এর পরেও যখন স্টেজ শো করব, প্রত্যেক শোয়ে ওঁর গান গাইব। ওকে মিস করব না। বাপ্পিদাও থাকবেন ওঁর গানের মধ্যে। কিন্তু বাড়িতে যখন ফাঁকা সময়ে একা বসে থাকব, তখন ওঁর কথা খুব মনে পড়বে। তখন ভাবব, কেন এ রকম হল।