খুব ছোট বয়স থেকেই রোজগারের চেষ্টা করতে হয়েছিল ঊষাকে, শাড়ি পরে নাইটক্লাবে গান গাইতেন। —ফাইল চিত্র
ভারতের প্রথম মহিলা পপশিল্পী তিনি। পঞ্চাশ বছর ধরে দেশে-বিদেশে গান গাইছেন ঊষা উত্থুপ। গেয়েছেন বলিউডের বহু ছবিতেও। তবে প্রথম জীবনে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাঁকেও। ভুল করেছেন, হোঁচট খেয়েছেন, অনেক কেঁদেছেন। সমস্ত খারাপ লাগার মধ্যেই আবার ঘুরে দাঁড়ানোর মন্ত্র খুঁজে নিয়েছেন ‘হরি ওম হরি’-র গায়িকা।
খুব ছোট বয়স থেকেই রোজগারের চেষ্টা করতে হয়েছিল ঊষাকে। শাড়ি পরে নাইটক্লাবে গান গাইতেন ঊষা। তাঁকে প্রথম মুম্বইয়ে ছবির জগতে সুযোগ করে দেন অভিনেতা দেব আনন্দ। ঊষা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “দিল্লিতে একটা নাইটক্লাবে দেব আনন্দ আমার গান শুনতে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই দেখা হওয়াটা আমার জন্য বিশেষ ব্যাপার ছিল। খুবই উত্তেজিত ছিলাম। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর তিনি আমায় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমি তাঁর ছবি ‘হরে রাম, হরে কৃষ্ণ’তে কাজ করব কি না।”
গায়িকা জানান, দেব আনন্দ তাঁর কণ্ঠ এবং গায়কি পছন্দ করেছিলেন। তাঁর কথায়, “আমার গান খুব পছন্দ করতেন দেব আনন্দ। এর পরে আমি রাহুল দেব বর্মণ, বাপ্পি লাহিড়ীর মতো সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গেও কাজ করেছি।”
৫৩ বছরের কেরিয়ারে হাজার হাজার গান গেয়েছেন ঊষা। অভিনয় করেছেন বিভিন্ন ভাষার ছবিতে। ভারী, খসখসে অথচ তীক্ষ্ণ কণ্ঠস্বর সবার মধ্যে ঊষাকে আলাদা জনপ্রিয়তা দিয়েছিল। ২০১১ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন গায়িকা।
অভিনয় করার কোনও পরিকল্পনা ছিল না, তা-ও অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকার সঙ্গে অল্প বয়সে অভিনয় করেছেন তিনি। জানালেন, দক্ষিণী ছবি ‘মাম্মুতি’তে অভিনয় করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছেন। প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে ‘সাত খুন মাফ’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন ঊষা। তবে ভিতরে ভিতরে খুবই ছাপোষা মানুষ তিনি। অকপটে জানান, গায়িকা না হলে শিক্ষিকা হতেন তিনি, হতে পারতেন মহিলা দর্জিও!
ঊষাকে প্রথম মুম্বইয়ে ছবির জগতে সুযোগ করে দেন অভিনেতা দেব আনন্দ।
পাঁচ দশকের সঙ্গীত জীবনে বিমর্ষতা গ্রাস করেনি তাঁকে। ঊষার দাবি, “চাপের মধ্যেই সবচেয়ে ভাল কাজ করতে পারি আমি। যখন দেখি কোনও কিছু আমার মন ভার করছে, আমি ১ থেকে ১৫ গুনি। এটা করলেই খারাপ লাগা চলে যায় আমার। কাজে কোনও বিরতিও চাই না।”
এই সময়ের গায়ক-গায়িকাদের নিয়েও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ঊষা। তাঁর মতে, শ্রেয়া ঘোষাল, সুনিধি চৌহান, অরিজিৎ সিংহ, শঙ্কর মহাদেবন, হরিহরণের মতো শিল্পীরা অসাধারণ।