কিছু কি লুকোচ্ছেন সইফ আলি খান, করিনা কপূর খান? ছবি: সংগৃহীত।
১৬ জানুয়ারি থেকে ২৮ জানুয়ারি। সইফ আলি খানের উপর হামলার পর ১০ দিন কেটে গিয়েছে। অভিযোগ, গত ১৫ জানুয়ারি গভীর রাতে দুষ্কৃতী হামলা হয় সইফের অভিজাত আবাসনে। ডাকাতিতে বাধা দিতে গেলে ছ’বার ছুরিকাঘাত করা হয় অভিনেতাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যবসায়ী বন্ধু এবং শিশুপুত্র তৈমুরকে সঙ্গে নিয়ে অটোয় চড়ে লীলাবতী হাসপাতালে পৌঁছন সইফ। পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শিরদাঁড়া সোজা রেখে আপাতদৃষ্টিতে একজন সুস্থ মানুষের মতোই বাড়ি ফিরে আসেন। যদিও তাঁর শরীরের একাধিক স্থানে ব্যান্ডেজ দেখা গিয়েছে।
এর পরেই সইফ-করিনার পরস্পরবিরোধী বয়ান, প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে গিয়ে পুলিশের একের পর এক ভুল পদক্ষেপ, হাসপাতালের চিকিৎসকদের ছুরিকাঘাতের দাবি নস্যাৎ করে ফরেন্সিক তদন্ত রিপোর্টে ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের মতো কথা-সহ একাধিক পরস্পরবিরোধী তথ্য নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, যার সদুত্তর মেলেনি খান পরিবার, পুলিশ এবং লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। যেন প্রত্যেকে নীরবতা পালনের শপথ নিয়েছেন। কী কী প্রশ্ন—
এক, হাসপাতালের চিকিৎসক ভার্গবী পাটিল বান্দ্রা পুলিশের কাছে যে তথ্য দিয়েছিলেন তাতে সাফ বলা হয়েছে, ১৬ জানুয়ারি ভোর ২.৩০ মিনিট নাগাদ সইফের উপর হামলা হয়। হামলার পর বাসভবন থেকে মাত্র ১০ মিনিট দূরের লীলাবতী হাসপাতালে যখন তিনি পৌঁছন তখন ভোর ৪.১১ মিনিট। রক্তাক্ত অবস্থায় দেড় ঘণ্টা বাড়িতে কী করছিলেন সইফ?
দুই, হাসপাতালের দাবি, ছুরির ২.৫ ইঞ্চি অংশ মেরুদণ্ডের কাছে আটকেছিল। ওই অবস্থায় সইফ কী ভাবে এত ক্ষণ ঘরে বসে থাকতে পারলেন?
তিন, অটোচালকের বয়ান অনুযায়ী, অভিনেতার সঙ্গে এক জন পুরুষ এবং একটি শিশু ছিলেন। শিশুটি সম্ভবত অভিনেতার ছেলে তৈমুর আলি খান। করিনা কেন সইফকে এ ভাবে ছেড়ে দিলেন? কেন অটোয় চেপে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল সইফকে? কেনই বা হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বন্ধুকে ফোন করে ডাকতে হয়েছিল অভিনেতাকে?
চার, চালক সইফকে যে সময়ে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান এবং হাসপাতালে ভর্তির যে সময়সূচি, তাতে বিস্তর ফারাক।
পাঁচ, করিনার বয়ান অনুযায়ী, তিনি ঘটনার রাতে তারকা বন্ধুদের সঙ্গে রাতপার্টিতে গিয়েছিলেন। ফেরার পর একাদশ তলের শয়নকক্ষে তিনি এবং সইফ ছিলেন। নীচের তলা থেকে আচমকা চিৎকার শুনে ছুটে যান। ছোট ছেলে জেহ্কে দুষ্কৃতী কব্জা করার চেষ্টা করছে দেখে সইফ বাধা দেন। শিকার ফস্কে যাচ্ছে দেখে তাঁকে আঘাত করেন হামলাকারী। কিন্তু এর পর করিনা সইফকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়ননি। বরং তিনি ছিলেন ছোট ছেলের কাছে। তৈমুর গিয়েছিল সইফের সঙ্গে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই করিনার দিদি করিশ্মা কপূর এসে বোন আর বোনপোকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে চলে যান! দিদির কাছে জেহ্ নিরাপদ জেনেও কেন হাসপাতালে না গিয়ে দিদির বাড়িই চলে গেলেন করিনা?
ছয়, হাসপাতালের দাবি, ধারালো অস্ত্রে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত সইফ। চিকিৎসকেরা ছুরির ভাঙা অংশের ছবিও দেখিয়েছেন। এ দিকে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ বলছেন, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাত আহত সইফ! কোনটা সত্যি?
সাত, জেহ্-র দেখভালকারী পরিচারিকা প্রথম আততায়ীর মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, আততায়ীর হাতে লাঠি ছিল। তা হলে কি সইফের শরীরে ছুরি নয়, লাঠির আঘাত?
আট, করিনা কি সইফকে রক্ষা করার আদৌ চেষ্টা করেছিলেন? উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে তাঁর শরীরে কোনও আঘাত নেই কেন? যেখানে আক্রমণের সময় পরিচারিকাও অল্পবিস্তর আহত হয়েছিলেন! অভিনেত্রী কি সেই সময় নেশাচ্ছন্ন ছিলেন? আদতে কিছুই করার মতো অবস্থায় ছিলেন না?
এই প্রশ্নের কোনও জবাব মিলছে না ঘটনার সঙ্গে জড়িত কারও থেকে। কোন রহস্য লুকোতে এই নীরবতা! কেনই বা ১০ দিন পরেও একটি ঘটনা ঘিরে এত ধোঁয়াশা? কে জবাব দেবে!