দু’দশক পূর্ণ হ্যারি পটার সিরিজের। ছবি: রয়টার্স
অবিশ্বাস্যই বটে! হ্যারি পটারের গল্প নাকি কোনওক্রমে জানতে পেরেছে গোটা বিশ্ব। প্রথম গল্প ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলজফার্স স্টোন’ প্রকাশের আগে নাকি প্রকাশকদের প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়েছিলেন লেখিকা জে কে রোওলিং। সে কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, পৃথিবীটাকে বদলে ফেলতে কোনও জাদু জানতে হয় না, মানুষের ভেতরের শক্তি দিয়েই বদল সম্ভব। অথচ তাঁর সৃষ্ট জাদুকাঠিতেই মাতোয়ারা দুনিয়া। ১৯৯৭-এর ২৬ জুন। প্রকাশিত হয়েছিল পটার সিরিজের প্রথম বই ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোজফার্স স্টোন’। বাকিটা ইতিহাস।
ছোট্ট মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে দিনের পর দিন চলত লেখা। এডিনবরার ক্যাফেগুলো সাক্ষী থেকেছে সেই সব সময়ের। এই ভাবেই ১৯৯৫-এ প্রথম লেখার খসড়া তৈরি হয়। কিন্তু প্রকাশক? দু’বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর অবশেষে মিলল প্রকাশক। ব্লুমসবেরি থেকে প্রকাশিত হল ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোজফারস স্টোন’ (কোনও কোনও দেশে বইটি প্রকাশ হয়েছিল ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য সরসরাস স্টোন’ নামে)। প্রথমে ছাপা হয়েছিল মাত্র ৫০০ কপি।
হ্যারি পটারের স্রষ্টা জে কে রোওলিং। ছবি— এএফপি
এর আগে ইংরেজি শিশু সাহিত্যে ব্লাইটন সিরিজ জনপ্রিয় ছিল বটে, কিন্তু হ্যারি পটার বাজারে এসে জনপ্রিয়তার সংজ্ঞাটাই বদলে যেন দিয়েছিল। ’৯০ বা তার পরের দশকে বড় হয়ে ওঠা শিশুকিশোরদের ছোটবেলাটা হয়ে উঠল হগওয়ার্ড-সময় (হ্যারি পটারের আবাসিক স্কুলের নাম হগ ওয়ার্ডস)। এবং সেটা কিন্তু গোটা পৃথিবী জুড়েই। অনেক হ্যারি অনুরাগী নাকি বাবা-মায়ের কাছে প্যাঁচা পোষারও আবদার জুড়েছিল।
আরও পড়ুন, তৃতীয় সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছেন কিম?
সিরিজের মোট সাতটা বই প্রকাশের সঙ্গেই জড়িয়ে গিয়েছে কোনও না কোনও ইতিহাস। দু’হাজার সালে বিশ্বের সব দেশেই মাঝ রাতে লঞ্চ করেছিল সিরিজের চতুর্থ বই ‘গবলেট অব ফায়ার’, যাতে কোনও ভাবেই পড়ুয়ারা যেন স্কুল ফাঁকি না দেয়। কিন্তু মজার ঘটনা হল, সন্তানের নেশা কাটানোর জন্য বই কেড়ে নিয়ে অভিভাবকেরা নিজেরাই বুঁদ হয়ে গেছেন হ্যারি, রন আর হারমেয়নির জগতে।
প্রথম বই প্রকাশের কয়েক দিনের মধ্যেই হ্যারি ও তাঁর সহপাঠীদের মুখে ব্যবহৃত শব্দ জায়গা করে নিয়েছিল অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে। ‘মাগল্’। অর্থ, যে ব্যক্তি অতি সাধারণ। হগ ওয়ার্ডসে অবশ্য ‘ম্যাজিক’ না জানা যে কেউই মাগল্। হ্যারিম্যানিয়ায় আক্রান্ত খুদে পাঠকের দল তখন মজেছে নতুন খেলায়। ঝাড়ুর ওপর চেপে সাঁ করে উড়ে গিয়ে খেলতে হয় ‘কুইডিচ’। নিমেষে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই খেলা।
কলকাতায় পটারম্যানিয়া। ফাইল চিত্র।
বই থেকে সিনেমা হয় হ্যারি পটার। হ্যারির চরিত্রে ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফ। প্রতিটি ছবি নিয়েই উন্মাদনার শেষ নেই। সাম্প্রতিক ছবি ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হলোজ’ জায়গা করে নিয়েছে সর্বকালের সেরা আটটি বাণিজ্যিক ছবির তালিকাতেও।
' (_)
(_)
পাঠকের সঙ্গেই বেড়েছে হ্যারি আর তার সাঙ্গপাঙ্গদের বয়স। ওঁরা এখন মধ্য তিরিশে। হ্যারি ও তাঁর সহপাঠীরা আরও কত যে নতুন গল্প নিয়ে হাজির হবেন, কে জানে! দু’দশক পূর্তির আনন্দে সোশ্যাল মিডিয়াতে হ্যারি পটার ইমোজি রিলিজ হয়েছে। লেখিকা রোওলিং-ও টুইট করেছেন ২০ বছর আগেকার কথা।